আ.বিমা টাইমস নিউজ ডেস্ক: টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর দোখলায় আদিবাসী জনগোষ্ঠির ধানি জমিতে (আমতলী বাইদে) লেক খনন প্রকল্প বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে এলাকার আদিবাসী গোষ্ঠি। আজ শুক্রবার দুপুরে ‘মধুপুরের বিক্ষুব্ধ আদিবাসী জনগণ ’এর ব্যানারে এ প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ বিক্ষোভ সমাবেশকে সফল করতে মধুপুরের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এসে পীরগাছা সেন্ট পৌলস উচ্চ বিদ্যালয়ে উপস্থিত হন। এরপর বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে দোখলা বাজার প্রদক্ষিণ করে দোখলায় বন বিভাগের রেঞ্জ কার্যালয়ের সামনে এ সমাবেশ করেন।

প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশে জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি মি. ইউজিন নকরেকের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন পরিষদের সাবেক সভাপতি মি. অজয় এ মৃ, মুক্তাগাছা ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মি. হিউবাট মৃ, মধুপুর কোচ আদিবাসী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মি. গৌরাঙ্গ বর্মন, বাংলাদেশ গারো ছাত্রসংগঠনের (বাগাছাস) সভাপতি এ্যাড. জন যেত্রা, বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের সভাপতি মি. অলিক মৃ, নারী নেত্রী কৌশলা নকরেক, জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদের নেতা মি. প্রবীন চিসিম প্রমুখ।

এ সময় বক্তারা বলেন যে, যুগ যুগ ধরে এবং বংশ পরম্পরায় আদিবাসীরা এ ধানি জমিতে ধান চাষ করে আসছেন। কৃষি জমিতে লেক খনন, শিশু বিনোদন পার্ক হোক তা এলাকার আদিবাসীরা চান না। ফলে প্রকল্প বাতিলের দাবিতে বিভিন্ন সময় বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। আবাদি জমিতে লেক খনন, ও বিদোন পার্ক প্রকল্পটি অনতি বিলম্বে বাতিল করতে হবে।

এ ছাড়াও বক্তারা আরও বলেন ‘আদিবাসী’ হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে হবে এবং সমতল এলাকার ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর জন্য পৃথক ভূমি কমিশন গঠনেরও দাবি জানান।

সমাবেশকে সফল করতে মধুপুর এলাকার গারো, কোচ ও বিভিন্ন সংগঠনের নারী-পুরুষ-ছাত্র-শিক্ষকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, দোখলার আমতলী বাইদে প্রকল্পের আওতায় মোট ৪৭ বিঘা ধানি জমি রয়েছে। বংশ পরম্পরায় ধান চাষ করে আসছে এলাকার ১৪টি গারো আদিবাসী পরিবার। ‘স্থানীয় ও ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর সহায়তায় মধুপুর জাতীয় উদ্যানে ইকো ট্যুরিজম উন্নয়ন ও টেকসই ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ওই জমিতে লেক খননের উদ্যোগ নেয় বন বিভাগ।

টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার দোখলা আমতলী বাইদে আদিবাসীদের কৃষি জমিতে বনবিভাগ কর্তৃক লেক প্রকল্প ঘোষণা করার পর থেকে আদিবাসী – বনবিভাগ পরস্পর সাংঘর্ষিক অবস্থানে রয়েছে। লেক প্রকল্পের আওতায় ১৪ টি গারো আদিবাসীর জমি রয়েছে। ফলে শুরু থেকেই জমির মালিকসহ আদিবাসীরা এই কৃত্রিম লেক খনন প্রকল্পের বিরোধীতা করে আসছেন। তাদের দাবী ওই জমিতে লেক খন করা হলে আদিবাসীদের একমাত্র আবাদী জমি হারাবে। এছাড়াও লেকের চারপাশে অবস্থিত আদিবাসীদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যহত হবে। সামাজিক, সাংস্কৃতিক পরিবেশ বিপর্যস্ত হবে।