নব্বই দশকের কিংবা বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে ময়মনসিংহ গারো পাহাড় অধ্যুষিত কিছু এলাকায় বহু বছর পর বন্য হাতির উপদ্রব নতুন করে শুরু হয়। কিন্তু আমরা যখন ৫-৭ কিংবা ৮ বছরের বয়সের ছিলাম তখনও বন্য হাতির চেহারা দেখিনি। আমাদের পুরনো আম্বিরা (দাদা দাদিরা) আমাদেরকে বন্য হাতির গল্প শুনাতেন। তারা নিজেদের দেখা এবং কাল্পনিক কিছু গল্প মিলিয়ে আমাদেরকে হাতির নানা ধরণের কাহিনি শুনাতেন। আমরা রুপ কথার গল্পের মত করে শুনতাম গোল হয়ে বসে। নানি দাদিরা বেশীরভাগই একটা কথা জোড় দিয়ে বলতেন যে, হাতিকে নাকি হাত ডাকতে নেই। তাতে নাকি তারা অনেক দূর থেকেই শুনতে পারে। এবং এতে মানুষ হামলার শিকার হতেও পারে। তারা বলতেন হাতিকে মামা বলে ডাকতে হয় । এতে নাকি হাতিরা সম্মান বোধ করে। আমরা বিহ্বল হয়ে শুনতাম আর মনের ভেতর কল্পনার জাল বুনতাম । কিন্তু ২০০০ সাল শুরু কয়েক মাস আগে আমার জন্মস্থান নালিতাবাড়ি থানায় সত্যি সত্যিই একদিন দুটি বন্য হাতি এসে হাজির হল। হাতির হাতে মারা গেলেন একজন। ঘরবাড়ী ভাঙল কয়েকজনের। এরপর কিছুদিন পর উধাও হল সেই হাতির দল। আবারও কয়েক মাস পর ঠিক আমার বাড়ীর কাছেই এলো আরও একটি বন্য হাতির দল। আমাদের বাড়ী টিলার উপরে হওয়ায় টিলায় না উঠে হাতিটি আমাদের বাড়ীর পেছন দিক দিয়ে গিয়ে দক্ষিণের ধান খেয়ে গেলো। আমরা ভয়ে আত্মহারা হয়ে গেলাম। ঘুম হল না সারা রাত। এইভাবেই শুরু হল এলাকায় নতুন সমস্যা । এরপর থেকে ভোগাই নদীর এপার থেকে পশ্চিমের বিভিন্ন গারো এলাকা ও আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকার প্রাত্যহিক সমস্যা হিসেবে উদয় হল বন্য হাতির আক্রমন। মারা গেলেন অনেকেই। অনেকেই হাতির ভয়ে পাহাড় থেকে সমতলে বাসা বাধলেন। বহুদিনের এই সংগ্রামে অভ্যস্ত হয়ে উঠল জনগণ। এতদিন এটুকুতেই ছিল কিন্তু বর্তমানে দুর্গাপুর, ধোবাউড়া এলাকার কিছু কিছু গারো গ্রামে হাতির উৎপাত নতুন করে শুরু হওয়ায় সার্ভাইব করার জ্ঞান সীমিত থাকায় এলাকার জানমাল বেশি আকারে ক্ষতি গ্রস্থ হচ্ছে। আমার দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতার আলোকে বলার চেষ্টা করব কি করলে আংশিক হলেও এই সমস্যাকে মোকাবেলা করা যায় ।
অতি প্রাচীন এবং কার্যকরী উপায়ে হাতি তাড়ানোঃ সবচেয়ে প্রাচীন উপায়ে ও কার্যকর ভাবে লোকালয় থেকে হাতি তাড়ানোর উপায় হল মশাল জ্বেলে বা আগুন জ্বেলে হাতির পালকে ধাওয়া করা। তবে এখানে সাহসের ব্যাপারটাও দেখতে হবে। সাহসীরা সম্মুখে থেকে নেতৃত্ব দিলে ব্যাপারটা কিছুটা সহজ। কিন্তু লক্ষ করতে হতে অতি সাহস দেখাতে গিয়ে যেন কারো প্রাণ না যায়। মশাল তৈরির ক্ষেত্রে লক্ষ রাখতে হবে যাতে করা তা বেশিক্ষণ ধরে জ্বলতে পারে। এবং সলতে যাতে বাঁশ বা মশালের হাতল থেকে সহজে খুলে পরে না যায়। সুবিধা মত যতটুকু লম্বা করে মশাল তৈরি করা যাবে ততই ভাল। এক্ষেত্রে জি আই তার ও চটের বস্তা ব্যাবহার করলে বেশি সুবিধা পাওয়া যায়। জিআই তার ভাল ভাবে পেচিয়ে চটের বস্তা বেধে পরিমাণ মত কেরোসিনে চুবিয়ে এই মশাল সহজেই তৈরি করা যায়। এক্ষেত্রে ডিজেল জাতিয় জ্বালানি বা কেরোসিনই সবচেয়ে উত্তম । পেট্রোল জাতীয় জ্বালানি থেকে দূরে থাকতে হবে। আদিবাসী অধ্যুষিত যেসব এলাকায় বহুদিন ধরে হাতির উপদ্রব চলে আসছে তারা এখনও বেশিরভাগ এই পদ্ধতিতেই হাতি তাড়িয়ে থাকে। এক্ষেত্রে অনেক সময় অনেকক্ষণ ধরে মশাল জ্বলতে থাকলে মশালের হাতল পুরে গিয়ে পরে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে অভিজ্ঞরা মশালের হাতলের সাথে একটি লোহা বেঁধে রাখেন। এতে দুটি সুবিধা পাওয়া যায় এক মশালের হাতল পুড়ে পরে যায় না, দুই সাহসীরা পেছন থেকে গরম লোহার ছেঁকা দিয়েও হাতি তাড়িয়ে থাকেন। তবে লোহার ছেঁকা দেওয়াটা এক্ষেত্রে আমি সাজেস্ট করছি না। এতে হিতে বিপরীত হতে পারে।
শব্দ বা আওয়াজ পদ্ধতিঃ শব্দ বা আওয়াজ পদ্ধতিও ধরতে গেলে একটি প্রাচীন হাতি তাড়ানোর পদ্ধতি। মশাল বা অন্যকিছু দিয়ে হাতি তাড়ানোর সময় অবশ্যই আওয়াজ করতে হবে। চিৎকার বা অন্যান্য কিছু দিয়ে জোড়ালো আওয়াজ করলে হাতি তারাতারি সরে পরার চেষ্টা করে। চিৎকার বা শব্দ ব্যাতিত কোন ধরণের পদ্ধতিই ঠিক মত কাজ করে না। এক্ষেত্রে বাজারে পাওয়া যায় এমন পটকা বা আতশবাজি জাতীয় বিস্ফোরক পুড়িয়ে শব্দ করিয়েও হাতি তাড়ালে সুফল পাওয়া যায়। তবে এক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করা জরুরী। বাজি বা পটকা ফুঁটাতে গিয়ে জানমালের যাতে কোন ধরণের ক্ষতি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। আমি বেশিরভাগ সময়ই লক্ষ করেছি যে বাজি বা পটকা ফুটিয়ে হাতি তাড়ালে তারা খুব তারাতারি সরে পরার চেষ্টা করে। যত জোড়ালো আওয়াজ হতে তত বেশী কাজ করবে এই পদ্ধতি। এক্ষেত্রে লোহার শক্ত পাইপ কিংবা লোহার চোঙ্গার ভেতর পটকা ফাটালে শব্দ আরও জোড়ালো হয়। অনেকদিন ধরে হাতির তান্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে এই পদ্ধতিতে হাতি তাড়ানোর কার্যকারিতা লক্ষ করা গেছে। তাছাড়া পুরনো টিন, টিনের কৌটা, ইত্যাদি পিটিয়ে শব্দ করালেও হাতি সেই দিকে যেতে চায় না। সুতরাং শব্দ বা আওয়াজ পদ্ধতি প্রতিটি হাতি তাড়ানোর পদ্ধতির জন্যই খুবই কার্যকর একটি উপায়।
বৈদ্যুতিক বাল্ব জ্বালানোঃ হাতি উপদ্রব করে এমন এলাকায় যেসব স্থানে বিদ্যুত রয়েছে সেই এলাকায় হাতি এলে বেশি পরিমাণে বৈদ্যুতিক আলো জ্বালতে হবে। অতি আলোতে হাতির আক্রমণ করতে সুবিধা হয়; কিংবা আলো দেখলে হাতি আরও বেশি আক্রমণ করে এই কথাটির সত্যতা এখনও কোথাও পাওয়া যায়নি। বরং অনেক দিনের অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে যেখানে বৈদ্যুতিক আলো বা যেকোন আলো বেশি দেখা গেছে সেসব স্থানে হাতি কম আক্রমণ করে। এক্ষেত্রে নিজের বাড়ীর আশেপাশে যতটুকু সম্ভব আলোকিত রাখার চেষ্টা করুন। তবে এক্ষেত্রে কিছুটা সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। যেমন হাতি যদি কোন ঘরে বা প্রতিবেশীর ঘরে ইতোমধ্যেই আক্রমণ করে থাকে সেক্ষেত্রে তখন বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়াই ভাল। এতে শর্ট সার্কিট কিংবা মানুষ বিদ্যুতায়িত হওয়ার ভয় থাকে। ঘরের আশেপাশে বেশি আলো জালিয়ে রাখা আসলে একটি প্রাথমিক প্রতিরোধ ব্যাবস্থা । এই পদ্ধতি আক্রান্ত হবার সময় কাজে নাও আসতে পারে।
যে কুসংস্কার গুলো কখনোই নামবেননা এবং এর প্রেক্ষিতে কিছুই করবেন নাঃ উপরে লিখেছিলাম হাতিকে হাতি বলতে নেই। মামা ডাকতে হয়। আবার কেউ কেউ এমনও বলে থাকেন হাতি সামনে এলে নুয়ে পরে মামা চলে যাও বা বাবু চলে যাও বললে হাতি নিজ থেকেই চলে যায়। এইসব কুসংস্কার একদমই আমলে নেবেন না। হাতি আক্রমণ করলে সেই স্থান যথাসম্ভব তারাতারি ত্যাগ করা চেষ্টা করুন। মাথা ঠান্ডা রেখে আপনজনদের নিয়ে যত তাড়াতাড়ি স্থান ত্যাগ করে বিপদ থেকে দূরে থাকতে পারেন সেই চেষ্টা করুন। মনে রাখতে হবে হাতি একটি পশু এবং বন্য পশু কখনোই মানুষের ভাষা বুঝে না। এক্ষেত্রে ইনিয়ে বিনিয়ে কিছু বলার চেষ্টা করা আর নিজেকে মৃত্যুর কাছে ঠেলে দেওয়া একই কথা। সবচেয়ে বড় কথা বল ঘর ভেঙ্গে দিলে ঘর বানানো যাবে ধান খেয়ে ফেললে আবারও ধান ফলানো যাবে; কিন্তু জীবন গেলে সেটি আর ফিরে আসবে না। সুতরাং কোন মিথ বা কুসংস্কারকে আমলে নিয়ে নিজেকে বিপদে ঠেলে দেবেন না।
হাতি ইতিমধ্যে আপনার বসতভিটায় প্রবেশ করেছে; কিন্তু আপনারা বাড়ীর বাইরে যেতে পারেননি সেক্ষেত্রে কি করবেন?
কিছুদিন আগের একটি বাস্তব ঘটনার কথা বলছি। তিনি সম্পর্কে আমার নানি হন। তাদের বাড়ী একদম জঙ্গল ঘেষে। তখন গভীর রাতে সবাই ঘুমে অচেতন। জঙ্গলে হাতি আছে সবারই জানা ছিল। তবে তাদের এদিকেই যে হানা দিবে তারা সেদিন সেটি ভাবেননি। কিন্তু রাতে ঠিকই ঐ গ্রামে হাতি হামলা করল। আমার নানির ভিটায় এসে হাতিগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে কাঠাল কলাগাছ ইত্যাদি খেতে লাগলো তখন নানা টের পেলেন তাদের উঠানেই হাতি হামলা করেছে। তাদের দরোজার সামনেই হাতি। সুতরাং দরজা খুলা মানেই নিশ্চিত মৃত্যু। এই মুহুর্তে তারা কি করবেন সেটি ভাবতে থাকলেন। তারা সিদ্ধান্ত নিলেন কেউ কোন আওয়াজ করবেন না নীরবে থাকবেন। যা হবার হবে। কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে কিছুক্ষণ খাবার খাওয়ার পর নীরবে হাতি তাদের ভিটা থেকে চলে গেলো। বুদ্ধির জোড়ে বেঁচে গেলেন তারা। তাহলে কি এই অবস্থায় সবাইকে একই পদ্ধতি প্রয়োগ করতে হবে? প্রশ্নটা কিছুটা জটিল। তবে এই ক্ষেত্রে বেশিরভাগই নির্ভর করে হাতির দলের স্বভাবের উপর। ময়মনসিংহ গারো পাহাড়ে ঘুড়ে বেড়ানো হাতির দলগুলোর বিভিন্ন দলের বিভিন্ন রকম স্বভাবের। যে দল মানুষ হত্যা করে তারা প্রতিটি এলাকায় গিয়েই একই ঘটনা ঘটায়। আবার কিছু হাতির দল নিরীহ টাইপের তারা খেতে আসে ঠিকই কিন্তু লোকালয়ের তেমন ক্ষতি করে না। এইরকম পরিস্থিতে আপনাকে মাথা খাটিয়ে বেড় করতে হবে আপনি কি করবেন। সব চেয়ে ভাল উপায় হল বর্তমানে আপনার গ্রামে বা এলাকায় যে হাতির দল অবস্থান করছে তাদের স্বভাব সম্পর্কে খোঁজ খবর নেওয়া। এক্ষেত্রে পাগলাটে হাতির দল হলে যেদিক দিয়ে হাতি থাকার সম্ভাবনা নেই সেদিক দিয়ে জানালে ভেঙে পালানোর চেষ্টা করতে পারেন। অন্যদিকে কিছুটা নিরীহ দল হলে নীরবে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে দেখতে পারেন। তবে এমন কিছু করা যাবে না যাতে করে তারা হঠাৎ ক্ষেপে যায়। সব চেয়ে ভাল উপায় হল হাতি আক্রমণ করে এমন এলাকায় একটি ইমার্জেন্সি এক্সিট এর ব্যাবস্থা করে রাখা বা বাড়তি একটি দরজা করে রাখা যেদিক দিয়ে হাতি থাকার সম্ভাবনা নেই। এই সময় একমাত্র আপনার ধীরস্থির চিন্তা ও উপস্থিত বুদ্ধিই আপনাকে নিরাপত্তা দিতে পারে।
গায়ের জোড় দেখানো যাবে নাঃ হাতি তাড়ানোর এক পর্যায়ে হয়তো হাতি পিছু হটতে থাকবে। আপনি আনন্দে কিংবা সাহস বেড়ে গিয়ে তাদের দৌড়ে তাড়ানোর চেষ্টা করবেন। হঠাৎ একটি গভীর জঙ্গল পেয়ে গেলে দেখবেন হাতি আর নড়ছে না। এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে আমরা যেমন নিজের ঘরে নিজেদের সাহস দেখাই তেমনি জানতে হবে জঙ্গল বা বনই হল হাতির ঘর। তারাও জঙ্গল পেলে আর সহজে সেই জায়গা থেকে নড়তে চায়বে না। এক্ষেত্রে হাতি সেই স্থান ত্যাগ না করা পর্যন্ত জঙ্গল বা বনের আশেপাশে অবস্থান নিন। ঘন জঙ্গলে কখনও ঢুকতে যাবেন না। যারা হাতি তাড়িয়ে অভস্ত্য তারা হয়ত জানবেন রাতে কালো জঙ্গলে লাইটের আলোতে হাতিকে আলাদা করে দেখা খুবই কঠিন। বিপদ আপনার সামনেও দাঁড়িয়ে থাকতে পারে। বরং নিজেকে শান্ত রেখে লক্ষ রাখতে থাকুন হাতি যেন সেই স্থান থেকে বেড়িয়ে এসে আবারও লোকালয়ে না ঢুকে। সাধারণত হাতির দল একবার একটি জায়গা থেকে বিতারিত হলে নতুন কোথাও যাওয়ার চেষ্টা করে। তার জন্য এক্ষেত্রে অপেক্ষা করাই সবচেয়ে উত্তম পদ্ধতি। তাছাড়া ক্ষেপে যাওয়া হাতির দল বনে ঢুকে গাছ ও গাছের ডালপালা ভাংতে শুরু করে গাছের ডালপালা বা আস্ত গাছ আপনার উপরে পরেও আপনি আহত হতে পারেন বা প্রাণহানীর মত ঘটনা ঘটতে পারে।
দিনের বেলায় হাতি দর্শন ও সাবধানতাঃ কোন এলাকায় হাতি এলেই সবার আগে দেখা যায় উৎসাহী জনতার কমতি নেই। বিভিন্ন অযুহাতে দিনের বেলা জঙ্গলে হাতি দেখতে আসা মানুষের অভাব থাকে না। যিনারা বেশীরভাগই হাতি বিচরণ এলাকা থেকে দূরে থাকেন। মূলত বিনোদন পাওয়ার জন্য তারা হাতি দেখতে আসেন। এক্ষেত্রে এলাকায় বসবাসরত কিছু মানুষকে দূর থেকে আসা মানুষদের সচেতন করতে হবে। যাতে করে ভুক্তভোগীরা এবং হাতি দর্শনে আসা দর্শকেরা বিপদে না পরেন। অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, অনেক সময়ই দেখা গেছে যে দূর দুরান্ত থেকে অতি উৎসাহী কিছু মানুষ হাতি দেখতে এসে হাতির দলকে ক্ষেপিয়ে রেখে যান যেটির ফল ভুগতে হয় এলাকাবাসীর। কেউ কেউ ঢিল ছুড়েন, নানা ধরণের ভঙ্গিমা করেন। এক্ষেত্রে বলে নেওয়া ভাল আপনি কখনোই এটি ভাবতে যাবেন না যে আপনি হাতির সাথে দৌড়ে জিততে পারবেন। এই ভুলটি করেই অনেকে এই পর্যন্ত হাতির হাতে জীবন দিয়েছেন। হাতি দর্শনার্থী কিংবা এলাকায় বসবাসরত কেউ যদি হাতি দেখতে দিনের বেলা যায় সেক্ষেত্রে কখনোই টিলার নিচে থেকে টিলার উপরের হাতি দেখতে যাবেন না। চেষ্টা করবেন কোন উচু টিলায় উঠে উপর থেকে নিচের হাতিকে দেখতে। কারন কোন কারনে হাতি ক্ষেপে গেলে আপনি যদি নিচে থাকেন তখন হাতি পাহাড় থেকে স্লিপ করে নেমে আসবে আর আপনি তার সাথে দৌড়ে কুলোতে পারবেন না। কারন টিলা থেকে হাতিগুলো দৌড়ে না নেমে সামনের দুপা স্লিপ করে নামে যার ফলে দুর্দান্ত গতিতে আপনাকে ধরে ফেলতে পারে হাতি। আর এতে প্রাণ চলে যেতে পারে আপনার।
এই প্রবন্ধে যেগুলো লেখা হয়েছে বেশীরভাগই বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে। তবে সব ক্ষেত্রে সব সময় এই পদ্ধতিগুলো কাজে নাও আসতে পারে। মনে রাখতে হবে সাবধানের বিপদ নেই। সব চেয়ে বড় কথা হল বন্য প্রাণীর সাথে প্রতিযোগিতায় না গিয়ে বুদ্ধি দিয়ে সমস্যা সমাধান করাটাই যুক্তিযুক্ত। আমাদের সব চেয়ে বড় সম্পদ হল প্রাণ। আগে প্রাণ রক্ষায় সর্বোচ্চ চেষ্টা করুন। তারপর বাকি সম্পদ।
বাপন নেংমিঞ্জা,
প্রাবন্ধিক, শেরপুর।