আ.বিমা টাইমস নিউজ ডেস্ক: মধুপুর দোখলায় লেক খনন করা হলে অবশিষ্ট বন ও পরিবেশের ওপর স্থায়ীভাবে ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন আদিবাসী নেতৃবৃন্দ। এছাড়াও লেকের আশেপাশে বসবাসকারী আদিবাসীদের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিবেশ হুমকির মুখে পড়বে বলেও জানিয়েছেন আদিবাসী নেতৃবৃন্দ। আজ ১১ নভেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার জলছত্রে ‘জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদ’ এর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা এসব কথা বলেন।
জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদ’র সভাপতি ইউজিন নকরেকের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বাগাছাস কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি জন যেত্রা এবং মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন ‘গারো স্টুডেন্ট ফেডারেশন’ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক লিয়াং রিছিল। এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদ’র সাধারণ সম্পাদক হেরিদ সিমসাং, গ্রেটার ময়মনসিংহ আদিবাসী ডেভেলপমেন্ট কাউন্সিল (জিএমএডিসি)র সভাপতি অজয় এ মৃ, মিসেস মেবুল দারু, গৌরাঙ্গ বর্মন, জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদ’র সাংগঠনিক সম্পাদক প্রবিণ চিসিম, নেরে নর্বাট দালবৎ প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, আমরা মধুপুরে বসবাসকারী আদিবাসী জনগণ ও বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে জানতে পারলাম যে, টাঙ্গাইলের মধুপুরের আদিবাসী অধ্যুষিত চুনিয়া, পেগামারী, পীরগাছা, সাইনামারী, ভূটিয়া ও থানারবাইদ গ্রামের পার্শ্বেই ১১ নং শোলাকুড়ী ইউনিয়নের পীরগাছা মৌজার আমতলী নামক বাইদে দেশী-বিদেশী পর্যটকদের চিত্ত বিনোদনের উদ্দ্যেশ্যে আদিবাসীদের তিন ফসলী আবাদী জমিতে বন বিভাগ কর্তৃক কৃত্রিম লেক খনন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে, যা আমাদের নিরীহ আদিবাসীদের জীবন-জীবিকা ও সংস্কৃতির ওপর মারাত্মক হুমকিস্বরূপ।
বন বিভাগের এমন আত্মঘাতি পরিকল্পনার সাথে দ্বিমত পোষণ করে তাদের স্বত দখলীয় ও আরওআর রেকর্ডভূক্ত জমিতে লেক খনন করা হলে এলাকার আদিবাসীদেরকে সাথে নিয়ে তা প্রতিহত করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন এসব আদিবাসী নেতারা।
প্রস্তাবিত এ লেক খননের জন্যে বরাদ্দকৃত বাজেট রসুলপুর বা অন্য এলাকায় যেখানে বন বিভাগের দখলিকৃত জমি আছে, যা আদিবাসীদের জীবন-জীবিকাকে প্রভাবিত করবে না সেরকম জায়গায় বাস্তবায়িত করার জন্য বন বিভাগের প্রতি আহবান জানান নেতৃবৃন্দ।
আদিবাসীদের আপত্তি থাকা সত্ত্বেও বন বিভাগ যদি লেক খনন প্রকল্প থেকে সরে না যায়, তাহলে সেটি শুধু মানবাধিকার লঙ্ঘন নয়, দেশের সংবিধান, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও সরকারের অনেক ইতিবাচক পদক্ষেপ ও অঙ্গীকারের বরখেলাপ হবে। এমনকি জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদন্ডেরও লঙ্ঘন হবে বলেও জানিয়েছেন আদিবাসী নেতৃবৃন্দ।