নজরুল সংগীতের উজ্জ্বল নক্ষত্র শিল্পী যোসেফ কমল রড্রিক্স (৬৮) আর নেই। আজ রোবার (৩১ জানুয়ারি) বিকাল সাড়ে ৩টায় রাজধানীর পান্থপথ গ্রীণলাইফ হাসপাতালে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এছাড়াও গুণী শিল্পী দীর্ঘদিন ধরে কিডনি রোগে ভুগছিলেন।
খ্রীষ্টান সমাজের অন্যতম প্রথিতযশা শিল্পী যোসেফ কমল রড্রিক্স একেধারে ছিলেন সংগীতশিল্পী। অন্যদিকে একজন দক্ষ গীতিকার ও সুরকার। দীর্ঘকাল ধরে কমল রড্রিক বাংলা সংগীত জগতে বিশেষ অবদান রেখে গেছেন। তিনি জাতীয় বিটিভি ও বিভিন্ন প্রাইভেট চ্যানেল ও রেডিও’র একজন বিশিষ্ট নজরুল সংগীতশিল্পী। নিজে অসংখ্য গান রচনা এবং সুরারোপ করেছেন। এছাড়াও তিনি ১৯৭০ সাল থেকে বাংলাদেশ বেতার ও ১৯৭২ সাল থেকে বাংলাদেশ টেলিভিশনে গান নিয়মিত পরিবেশন করেন। তাঁর বর্ণাঢ্য সংগীত জীবনে সংগীতে অবদানের জন্য বিভিন্ন সময় পেয়েছেন গুণীজন সম্মাননা। খ্রীষ্টীয় ধর্মসঙ্গীত ‘গীতাবলীতে’ গীতিকার, সুরকার, পরিচালক ও শিল্পী হিসেবে মোট ৮০টি গান লিপিবদ্ধ রয়েছে।
এছাড়াও তিনি জীবদ্দশায় বাংলাদেশ টেলিভিশনে সংগীত পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ত্রিশালের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে এক্সটারনাল এক্সামিনার হিসেবে কাজ করেছেন। ঢাকা থিয়েটারের ফাউন্ডার মেম্বার হিসেবে সংগীত পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন।
কমল রড্রিক্স এর জন্ম ১৯৫২ সালের ১২ আগস্ট কালীগঞ্জ থানার নাগরী গ্রামে। সংগীত চর্চা শুরু করেন স্কুল জীবন থেকেই। তিনি বুলবুল ললিতকলা একাডেমি থেকে সংগীতে তালিম শুরু করে এবং পরে ওস্তাদ পিসি গোমেজের কাছে উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের তালিম নিয়েছেন। পরবর্তীতে তিনি ভর্তি হন কলেজ অব মিউজিক-এ সাটিফিকেট কোর্সে। ছায়ানটেও পাঁচ বছর রবীন্দ্র নজরুল ও উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতে তালিম নেন।
মৃত্যুর পূর্বে দীর্ঘ সময় অসুস্থ ছিলেন। তাঁকে আর্থিক সাহায্যের খুব প্রয়োজন ছিল। কেউ কেউ ব্যক্তিগতভাবে তাঁকে সাহায্য করলেও প্রয়োজনের অপ্রতুল। সরকার ও বেসরকারীভাবে তাঁকে সেভাবে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেনি, যা দু :খজনক বলেও কেউ কেউ মন্তব্য করেন।
মৃত্যুকালে তিনি পরিবারে রেখে গেছেন স্ত্রী, দুই সন্তানসহ অসংখ্য স্বজন। বিশ্বস্তসূত্রে জানা গেছে, আমাগীকাল সকাল ১১টায় তেজগাঁও গির্জায় তাঁর মরদেহ অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া শেষে খ্রীষ্টীয় রীতিতে কবরস্থ হবে।