দিনকে দিন অনলাইন মার্কেটিং এর প্রতি মানুষে ঝোঁক বাড়ছেই। এটির প্রধান এবং অন্যতম মূল কারণ হলো গ্রাহকের সময় স্বল্পতা, বস্তুর সহজ লভ্যতা, বাড়তি ঝমেলা কম ইত্যাদি। ফলে এ যুগের শিক্ষিত বেকার কিংবা চাকরির পাশাপাশি অনেকেই অনলাইন মার্কেটিং পেশায় (ফুল বা পার্ট টাইম) হিসেবে মাঠে নেমে পড়েছে। অর্থাৎ আপনি যদি ঘরে বসে অনলাইনে ইনকাম করতে চান; তাহলে এফিলিয়েট মার্কেটিং বাজার আপনার জন্য বাড়তি আয়ের বিশাল সুযোগ করে দিতে পারে। আপনার বাড়তি আয়ের অন্যতম উৎস হতে পারে। আপনার লব্ধ জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে এবং এফিলিয়েট মার্কেটিং সম্পর্কে সম্যক ধারণা নিয়ে আপনি নিজেই ঘরে বসে অনলাইনে এফিলিয়েট মার্কেটার হিসেবে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেন।
এফিলিয়েট মার্কেটিং কি?
এফিলিয়েট মার্কেটিং হলো কমিশন নির্ভর একটি বিজনেস প্রক্রিয়া, যেখানে আপনার নিজের কোন প্রডাক্ট নেই; অথচ অন্যের প্রডাক্ট বা সার্ভিস বিক্রি করে আপনি নির্দিষ্ট পরিমান কমিশন পাওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে আপনার ভূমিকা হবে তবে শুধু এফিলিয়েট মার্কেটার হিসেবেই নয়, সেখানে আপনি বিজ্ঞাপন দাতা, এবং একজন কাস্টমারও বটে। অর্থাৎ আপনার সাইটে যত বেশি ভিজিটর বাড়বে; ঠিক তত বেশি আপনার এফিলিয়েট প্রডাক্ট সেল হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে এবং বিক্রিয়কৃত প্রডাক্ট থেকেই নির্দিষ্ট হারে আপনি কমিশনটি পেয়ে পাবেন।
এফিলিয়েট মার্কেটিং এর কিছু জনপ্রিয় বাজারসমূহ
বর্তমান সময়ে যেসমস্ত বড় বড় কোম্পানিগুলো এফিলিয়েট সুবিধা এবং উচ্চহারে কমিশন দিয়ে থাকে, জনপ্রিয় বাজার হচ্ছে আর সেগুলো হলো, যেমন-
১। ব্লু হোস্ট ওয়েভ হোস্টিং সার্ভিস (www.bluehost.com)
২। আমাজন (www.amazon.com)
৩। আলীবাবা (www.alibaba.com)
৪। থিমফরেস্ট (www.themeforest.net)
৫। হোস্টগেটর হোস্টিং সার্ভিস (www.hostgator.com)
৬। ইবাই (www.ebay.com) ইত্যাদি
এছাড়াও এফিলিয়েট মার্কেটিং এর জন্য আরও কিছু জনপ্রিয় প্লাটফর্ম রয়েছে যেমন- ওয়েব সাইট, ইউটিউব এবং সোস্যাল মিডিয়া সাইটস ইত্যাদি।
এফিলিয়েট মার্কেটিং এর জন্য স্থায়ী এবং সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো নিজস্ব ওয়েব সাইট তৈরি করে নেয়া। ফলে আপনার এফিলিয়েট মার্কেটিং এর কৌশলগুলো নিজের মতো করে এবং যুগোপযোগী করে সাজাতে পারেন; যাতে ভোক্তাদের কাছে আপনি সহজে পৌঁছে যেতে পারেন।
আপনি কেন এফিলিয়েট মার্কেটিং করবেন?
এফিলিয়েট মার্কেটিং তথ্য প্রযুক্তির সৃষ্ট অত্যাধূনিক পেশা। এ পেশায় নিজস্বতা রয়েছে; রয়েছে অন্যান্য কাজ থেকে আলাদা বৈশিষ্ট।
-নিজস্ব প্রডাক্ট না থাকলেও অন্যের প্রডাক্ট বিক্রয় কল্পে অর্থাৎ এফিলিয়েট মার্কেটিং মাধ্যমে পণ্য বিক্রি করে আয় করা যায়।
-ঘরে বসে কাজ এবং আয় সহজ করা যায়।
-পছন্দমতো পণ্য আপনার সাইটে সাজানো যায়।
-পার্ট টাইম বা ফুল টাইম ক্যারিয়ার তৈরি করা যায়।
-নিজস্বতা এবং কাজের স্বাধীনতা আছে।
-একটি এফিলিয়েট সাইট দিয়ে একাধিক উপায়ে ইনকাম করা যায়।
-এ কাজে সব সময় এক্টিভ থাকার প্রয়োজন হয় না।
-এফিলিয়েট একটি ক্রিয়েটিভ এবং স্মার্ট পেশা।
প্রবন্ধটি শেষ করার আগে কিছু প্রয়োজনীয় কথা বলে শেষ করতে চাই ; আর তা হলো, এ পেশায় কাজ করতে হলে আপনার সময়, কাজের কৌশল এবং বিনিয়োগের কথা মাথায় অবশ্যই রাখতে হবে। কাজগুলো কিভাবে শুরু করবেন সে বিষয় সম্যক ধারণা এবং মাস্টার প্লান থাকা চাই। এবং সাথে আপনার ধৈর্যশীল, আইডিয়ালিস্টিক, সর্বপরী কমিটেট হওয়া জরুরী; তাহলেই আপনি একজন সফল এফিলিয়েট মার্কেটার হতে পারবেন।
লুই সাংমা, ফ্রান্স
ওয়েভ ডেভেলপার, ব্লগার, ফ্রিল্যান্সার এবং সাংস্কৃতিক কর্মী