জীবনে সফলতা আনতে স্বপ্ন বুনে যেতে হয়, এবং আজও স্বপ্ন বুনে যাই- নীভা

সাজগোজ মেয়েদের অতি প্রাচীন কর্মযজ্ঞ। যুগের বিবর্তনে সাজগোজের কলা কৌশল, ব্যবহৃত সামগ্রীর ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। ফলে এ যুগের মেয়েদের আধুনিক সাজগোজ একটি অপরিহার্য বিষয়। কীভাবে নিজেকে ন্যাচারাল লুক রাখা যায় এবং কীভাবে চেহেরাটা স্বাভাবিক রাখা যায় সেই বিশেষ কৌশল রপ্ত করা মামুলি ব্যাপার নয়। কিন্ত আদৌ কি এই ন্যাচারাল লুক মেকআপ বিহীন রাখা যায়!

প্রশ্নগুলো উহ্য রেখে আমাদের আজকের বিশেষ আড্ডা। আড্ডার বিষয় কীভাবে একজন পেশাদার সাজ শিল্পী হয়ে উঠে, এত মোহনীয় রুপের ভেতরের রহস্যগুলো কোথায়, কলাকৌশলইবা কি, ঠিক এমন কিছু সাফল্য ব্যর্থতার গল্প নিয়ে কথা বলেছিলাম এ যুগের সাজ শিল্পী এবং চেরী বিউটি পার্লারের তরুণ উদ্যোক্তা নীভা রুগার সঙ্গে। এমন জমপেশ আড্ডায় ছিলেন আ.বিমা টাইমসে সিনিয়র অথ্যের এবং প্রবাসী সাংস্কৃতিক কর্মী জনাব লুই সাংমা।

নিজের শিক্ষা, পরিচয় এবং দক্ষতা সম্পর্কে সংক্ষিপ্তাকারে তিনি বলেন, ২০০২-২০০৩ সালে পিটিআই পরীক্ষায় ফার্স্ট ডিভিশন পেয়ে মিশনারী শিক্ষকতা শুরু করি। শিক্ষকতা আমার বেশ লাগতো। কিন্তু বিয়ের পর স্বামীর চাকরীর সুবাদে পারি জমাতে হয় এক জেলা থেকে অন্য জেলায়। স্বামীর উৎসাহ এবং সহযোগিতায় হাতের কাজগুলো প্রশিক্ষণের মাধ্যমে রপ্ত করি যেমন- বুটিক, ব্লক বাটিক, কারচুপি, ফাস্টফুড, সুপিচ পার্লারের কাজ ইত্যাদি।

ফাইল ছবি: নীভা রুগা

এরপর ২০০৮ সালে প্রশিক্ষণ শেষ করে বাসায় শুরু করলাম ব্লক বাটিক তৈরির স্বাধীন কাজ। ২০০৯ সালে একটি পার্লারে ম্যানেজমেন্টে চাকরীর অফার পেলাম। পার্লারের কাস্টমার হ্যান্ডেল, মেয়েদের দেখাশোনা, অফিসের প্রশাসনিক খুঁটিনাটি কাজ ম্যানেজ ইত্যাদি। যদিও অফিস সামলানো কঠিন কাজ; তবুও সব কাজ একাই সামলাতাম। স্কুল জীবনে নেতৃত্বের বিষয়ে ভালো দখল ছিল। জীবন জীবিকায় এসব নেতৃত্বের নৈতিক ট্রেনিং বেশ কাজে দেয় আমাকে। সেসব অভিজ্ঞতা এবং কর্মক্ষেত্রে আমার ভালো রিপোটেশান থাকায় বিভিন্ন জায়গা থেকে অফারও পেয়েছিলাম।

নীভার মতে, সাজ শিল্প একটা সময় ছিলো বাংলাদেশে সাজগোজের ক্ষেত্রে বেস মেকাপের জন্য পুরু লেয়ারের কেইকি ধারা খুব জনপ্রিয় ছিল। এখন কিন্তু সেসব আর খুব বেশি দেখা যায় না। এর চাহিদাও আর তেমন নেই। তার মানে হলো, মানুষের রুচির সঙ্গে তালমিলিয়ে কৌশলগুলো বদলাতে হয় পেশাদার সাজ শিল্পীদের। সেই সঙ্গে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে রপ্ত করতে হয় সাজের নিত্য নতুন কলা কৌশল। মোদ্দা কথা, পেশাদার রুপসজ্জা শিল্পীদের সময়োপযোগী করে নিজেকেও তৈরি করতে হয়।

আজকালকার পার্টি মেকআপের ক্ষেত্রে তো বটেই; এমনকি বিয়েতে কনে সাজসহ বরের  সাজগোজের কৌশলে এসেছে অসংখ্য পরিবর্তন। এই রুপসজ্জার দায়িত্ব পালন করেন একজন সুদক্ষ সাজ শিল্পী। রপ্ত করতে হয় নতুন সব কৌশল, জানতে হয় বিখ্যাত সব মেকআপ ব্র্যান্ডসহ পণ্য সামগ্রীর গুণাগুণ সম্পর্কে।

নীভার সঙ্গে আরও কথা হয়, কেন এই পেশায় আগ্রহী হলেন? জবাবে এই তরুণ শিল্পী বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে শিল্পমনা ছিলাম বলেই আজকে এই পেশায় এসেছি। স্কুল জীবন থেকে ছবি আঁকা, সাজগোজের প্রতি বাড়তি আগ্রহ ছিল। আসলে সাজ শিল্পীরাও শিল্পী। তাদের শৈল্পিক এবং নান্দনিক কাজ শিল্পসম্মত, সামাজে স্বীকৃত। যা দেখলে চোখ আটকে যেতে হয়। ফলে এ শিল্প ধারার প্রতি আমার অন্যরকম অনুসন্ধিৎসা ছিল বলতে পারেন।’ সেই ধারা এখনো অব্যাহত আছে জানিয়ে নীভা বলেন, ‘ব্যক্তি জীবনে যেমন মেকআপ পছন্দ করি; তার চেয়েও অন্যকে সাজাতে ভীষণ আনন্দ পান।’

একজন দক্ষ সাজশিল্পী হতে গেলে বিভিন্ন মেকআপ উপকরণের নাম জানতে হয়। এসব উপকরণের গুণাগুণ সম্পর্কে ধারণা, সামগ্রীর ব্যবহার ভালো জানতে হয়। সাজ শিল্পীর পদ্ধতিগুলো যেমন ফাউন্ডেশন, কনসিলার, প্রেসড পাউডার, মাশকারা, আই লাইনার, ব্রু প্লাক, মেনিকিউর পেডিকিউর আরও কত কি! একটা সময় নিজে এগুলো ব্যবহার করতাম, জানার চেষ্টা করতাম। কিন্ত কখনো ভাবেননি যে, একসময় এগুলোই হবে নিত্যদিনের কাজের সঙ্গী। আমি নিজেও জানতাম না একদিন সাজশিল্পী থেকে আজকে উদ্যোক্তা হয়ে উঠবো!

কখনো ভেবেছিলেন কী জীবনে একজন পেশাদার অঙ্গসজ্জা শিল্পী হবেন? প্রাসঙ্গিক উত্তরটা নীভা সাইকোলজিক্যালি শুরু করেন, ‘নীরব আকাঙ্খা মানুষের জীবনে কখনোবা বাস্তব হয়ে দাঁড়ায়। ঠিক তেমনি আমার জীবনে এই পেশা থেকে পেশাদারিত্বে ধাবিত করে। রূপসজ্জা শিল্পী হওয়ার পেছনে নিজের বাস্তবতা, এবং আমার চারপাশ এই সিদ্ধান্তে উপনীত করে। আমাদের গারো সমাজের মেয়েরা ঘর ছেড়ে শহরে বসবাস করে। এদের মধ্যে অধিকাংশ মেয়েরা এ মহান পেশায় জীবিকা নির্বাহ করছে। সমাজে স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে এনেছে অনেক পরিবারে। তা কোনভাবে অস্বীকার করার জো নেই।

এমনিতেই আমি বিয়ের পর স্বামীর কারনে গ্রাম ছেড়ে শহরে। এক শহর থেকে আরেক শহরে। এরপর থেকে নিজে কিছু করা, আমাকে কিছু করতে পারতেই হবে বিষয়টি মাথা খুড়ে খাচ্ছিল। শুরুতে বলেছি, প্রশিক্ষণের পর চাকরীতে সরাসরি ঢুকে যাই। আর সেখানে গিয়ে স্বচোখে দেখলাম, জানলাম, বুঝলাম এবং অনেক কিছু শিখলাম। অসংখ্য পার্লার মালিকরা যদি কোন ধরণের অভিজ্ঞতা ছাড়াই পেশাদারিত্ব দেখাতে পারে, ব্যবসায় মুনাফা আনতে পারে, তাহলে আমরা কেন পারবো না? সেই চাপা ক্ষোভ থেকে পেশাদারিত্ব চেপে বসে আমার মধ্যে। আর সেই যে শুরু …….।‘

পেশাদারিত্ব বলতে আমার বাস্তব অভিজ্ঞতা বলে, কোন কাজ এবং কোন দায়িত্বকে খাটো করে দেখতে নেই। ছোট খাটো দায়িত্ব যদি সঠিকভাবে পালন করতে পারলে; নিজের মধ্যে উপরে উঠার অন্যরকম দুর্দুান্ত স্পিরিট কাজ করে। বছর পাঁচেক সাজ শিল্পীর চাকরি করতে করতে উদ্যোক্তা হবার স্বপ্ন দেখি। টুকটাক করে বিভিন্ন উপকরণ কিনে বাসায় চর্চা শুরু করি। নীভা বলেন, ‘একসময় কবে যেন নিজের অজান্তেই পেশাগতভাবে সাজাতে শুরু করলাম। নিজেকে আরও যোগ্য করে গড়ে তুলতে তাই নিজে নিজে হাতে কলমে চর্চা ও নিরীক্ষার মাধ্যমে ঝালিয়ে নিতাম নিজের জ্ঞান ও দক্ষতাকে।’

পেশাগত রূপসজ্জা শিল্পী হিসেবে নীভার পথচলা ২০০৯ সাল থেকে। এর মধ্যেই উদ্যোক্তা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করছেন। গ্রাহকের পছন্দ আর নিজের রুচির মাধুরী মিশিয়ে সাজাতে ভালোবাসেন। শুধু যে বিয়ের কনেদের সাজান তাই নয়, সামাজিক উৎসব এবং যেকোন অনুষ্ঠানের পার্টি সাজগুলোর সেবা দিয়ে থাকেন। বিয়ের আগে কনের চেহারায় কিভাবে আরও উজ্জলতা বাড়বে, কেমন খাবার খেলে ত্বক সুস্থ থাকবে এসব বিষয়ে খোলামেলা পরামর্শও দিয়ে থাকেন। বিভিন্ন ধরনের মেকআপ রয়েছে যা দিলেও মূল চেহারা যেন হারিয়ে না যায় সেদিকে সতর্ক থাকেন দক্ষ সাজ শিল্পীরা। ব্যক্তির চাহিদা, প্রোগ্রামের পরিবেশ, তার ব্যাক্তিত্ব, চেহারার গড়ন, পোশাক, গয়না সব বুঝে মানুষ ভেদে বিভিন্ন সাজ দিয়ে থাকেন একজন পেশাদার রূপশিল্পী। মেকাপের উপকরণগুলোও যেমন দামের হোক অথবা কোন বিখ্যাত ব্র্যান্ডের; কাজের বেলায় পণ্যের দামের চেয়ে নিজের কাজের মানের ওপর বেশি গুরুত্ব দিই। গ্রাহকের সন্তোষ্টি আমার প্রধান লক্ষ্য। গ্রাহক সন্তুষ্টিতে কোনো কাজে হাতে কলমে করার পাশাপাশি নতুন বিষয় জানার কোন বিকল্প নেই। এভাবেই আমার চাকরীর পাশাপাশি নিজের কাজের যোগ্যতা ও আর্থিক বিষয় আরও মজবুত করতে আমার মিনিমাম বছর দশেক লেগে যায়।

আ.বিমা টাইমসকে বিউটি শিল্পী এবং গারো তরুণ উদ্যোক্তা নীভা জানান, প্রায় দশ বছরের অভিজ্ঞা নিয়ে চট্টগ্রাম বিভাগে ২০১৮ সালের ৬ জানুয়ারী বিউটি শিল্প উদ্যোক্তা হিসেবে যাত্রা শুরু। আমাদের সেবাদানকারী বিউটি পার্লারের নাম ‘চেরী বিউটি পার্লার’। প্রতিষ্ঠানে বিউটিশিয়ানদের সংখ্যা মোট পাঁচজন। মাসিক বেতন ভাতা পেশাদারনুযায়ী একজন সাজ শিল্পীর সর্বোচ্চ বেতন নির্ধারিত হয়ে থাকে। সারাদেশে ব্যক্তি উদ্যোগে গারোদের পার্লার ব্যবসা অহরহ গড়ে উঠেছে। শুধু বিভাগীয় ও জেলা শহর নয়, উপজেলা পর্যায়েও পার্লার ব্যবসা বেশ চোখে পড়ার মতোন। পার্লারগুলোতে কাজ করে আমাদের শত শত গারো বিউটিশিয়ান। এদের মধ্যে অধিকাংশই হতদরিদ্র পরিবার থেকে আসা। এই সেক্টরে কাজ করে অনেক অসহায় মেয়ে স্বাবলম্বী হতে শুরু করছে। তাদের মাসিক আয় দিয়েই চলে গ্রামের অনেক দরিদ্র পরিবার।

গ্রাহক মূলত কারা এবং কারা সাজতে আসেন? এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি কোন মিডিয়াতে বিজ্ঞাপন দেই না, আমার হাতের বিশ্বস্ততায়, কাজে আমার ক্লায়েন্ট বারংবার ফিরে আসে এবং অন্যকে আসতে উৎসাহিত করে। অর্থাৎ মূলত তারাই আমাকে নিজ তাগিদে খুঁজে নিয়েছেন। ফলে মানুষের মুখে মুখেই আমার কাজের পরিচিতি বেড়েছে। যারা আমার সঙ্গে কাজ করেছেন বা শিখেছেন তারা আমার প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন।’

একজন পেশাদার বিউটিশিয়ান হতে গেলে কত সময় লাগে, এবং কিভাবে হওয়া যায় প্রসঙ্গে নীভা বলেন, একজন দক্ষ কারিগর অর্থই দক্ষ বিউটিশিয়ান। পেশাদার শিল্পী হতে গেলে মিনিমাম চার পাঁচ বছর লেগে যায়। তবে সেটা বিউটিশিয়ানের শিক্ষার আগ্রহর ওপর নির্ভর করে। আগ্রহ বেশি হলে এর চেয়েও কম সময় লাগে। পেশাদার সাজশিল্পী হতে গেলে যেসব গুণাবলী অবশ্যই থাকতে হয় আর সেগুলো হলো-

_নিষ্ঠার সঙ্গে শেখার আগ্রহ

_আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠা

_দক্ষতা অর্জনে সচেতন থাকা

_দায়িত্ব সম্পর্কে বিশ্বস্ততা আর স্বচ্ছতা

_পরিশ্রম আর ধৈর্য

_পেশাদারিত্বের মাধ্যমে স্বাবলম্বি হতে শেখা

যেকোন বিষয় পেশাদার হতে গেলে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে নিজের আগ্রহ এবং দক্ষতা সম্পর্কে ঝালাই করে নিতে হয়। এরপর সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজ নেমে পরতে হবে। দক্ষতা অর্জনের পাশাপাশি নতুন বিষয়ে জানার এবং পড়ার এর কোন বিকল্প নেই। যুগের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে হবে। আধুনিক সাজ কলাকৌশল, প্রসাধনী, এবং ব্যবহার সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করতে হবে। প্রতিষ্ঠানিক পরিচিতি লাভের আগে নিজেকেও সামাজিকভাবে, এমনকি সোস্যাল মিডিয়াতে মেলে ধরতে হবে। এতে আপনার বিশ্বস্ততা, গ্রহণযোগ্যতা, আচার-ব্যবহার, কথাবার্তায় বিশ্বস্ততা বাড়বে; যাতে আপনি খুব সহজেই স্বনির্ভর এবং আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠতে পারেন।

কীভাবে উদ্যোক্তা হলেন, এর পেছন গল্পটি কেমন ছিল- পার্লার সম্পর্কে ম্যানেজমেন্ট এবং বিভিন্ন কাজে দক্ষতা দেখে স্বামী নিজেই উদ্বুদ্ধ হয়ে আমাকে অফার করে বলে, ‘তুমি নিজে এখন সবই পার, নিজেইতো একজন উদ্যোক্তা হয়ে উঠতে পারো, নিজের দক্ষতা কাজে লাগাতে পারো!’ মূলত স্বামীর উৎসাহ এবং অনুপ্রেরণায় একজন বিউটিশিয়ান উদ্যোক্তা হয়ে উঠার বীজটি সেদিনই রোপন করি। নিজের ঐকান্তিক ইচ্ছা, লব্ধ অভিজ্ঞতা, পরিবার থেকে প্রণোদনা, সর্বপরী উদার স্বামীর সার্বিক সহযোগিতা এবং অর্থায়ন সমন্বয় করে গারো নারী সাজ উদ্যোক্তা হয়ে পথ চলেতে শুরু করি।

সব শেষে তিনি আরও বলেন, সাধারণ মানুষ থেকে অসাধারন হয়ে উঠার পথের বাঁকে বাঁকে থাকে ছোট ছোট গল্প থাকে। সে গল্প হতে পারে বিশ্বাসের, পরিশ্রম, ধৈর্য ও সাহসিকতার। তবে যে কাজই করি না কেন, সে হোক ছোট বা বড় তবে সে কাজকে সন্মান শ্রদ্ধা এবং ভালবেসে কাজটাকে এগিয়ে নিতে পারলে সে পেশায় সফলতা অর্জন করে নিজে আত্বনির্ভরশীল হয়ে উঠা সম্ভব।

তবে সংশয় থেকে যায় কোভিড ১৯ প্রকোপের দরুন নতুন উদ্যোক্তা হয়ে ঠিকমতো এখনো ব্যবসা বাণিজ্য করা ঝুকিপূর্ণ থেকেই গেছে। আরও কত চলবে তাও জানি না। কতদিন এ শিল্পচর্চার মাঝে নিজেকে টিকিয়ে রাখতে পারবেন তা এখনও নিশ্চিত নন তরুণ উদ্যোক্তা নীভা। তবে এ পর্যন্ত আসার পেছনে তার গ্রাহক ও অনুরাগীদের প্রতি কৃতজ্ঞতার পাশে নিজেকে আবন্ধ করলেন। আর বলেন, ‘যতদিন এ পেশায় যুক্ত আছি যেন সুনাম অক্ষুণ্ন রাখতে পারি সেই আমার প্রচেষ্টা আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।’ করোনার ফলে কাস্টমার কম থাকায় অলস সময়গুলোতে হাতের কাজগুলোকে আবার পুনরুজ্জীবিত করে, ঝালাই দিয়ে আাবার শুরু করেছি। নিজ হাতে তৈরি করুপণ্য পার্লারে ফ্রন্টডেস্ক সাজিয়ে রাখি। কাস্টমারদের কাছে বিক্রিও করছি। ভালো সাড়াও পাচ্ছি। পার্লারের কাজের সঙ্গে কারুপণ্য নিয়ে কাজ করতে আরও উৎসাহিতবোধ করছি। ভবিষ্যতে ‘রকমারী কারুপণ্য’ বুটিক নামে বাজার তৈরি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান অঙ্গসজ্জা শিল্পী নীভা।