আন্তর্জাতিক নিউজ ডেস্ক: ভারত মেঘালয়ের গারো বর্ষীয়ান নেতা এবং লোকসভার প্রাক্তন স্পিকার প্রয়াত পি এ সাংমার ৫তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁর পরিবার পি এ সাংমাকে পারিবারিকভাবে স্মরণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
বৃহস্পতিবার সকালে তাঁর পুত্র এবং মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড কে সাংমা, স্ত্রী সোরাদিনী কে সাংমা এবং কন্যা তুরার সাংসদ আগাথা কে সংমা পি এ সাংমার সমাধিতে বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।
প্রয়াত পি এ সাংমার ৫তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন তাঁর পরিবার
কে এই সাবেক গারো স্পিকার? পি এ সাংমা (পূর্ণ আগিতক) ১লা সেপ্টেম্বর ১৯৪৭ সালে উত্তরপূর্ব ভারতের মেঘালয় রাজ্যের পশ্চিম গারো পাহাড় জেলার চৌপাটি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ছোট আদিবাসী গ্রামে বেড়ে ওঠা পূর্ণ সাংমার জীবনের প্রথম থেকেই উপলব্ধি করেছিলেন উত্থানের জন্য জীবনে তাকে কঠোর সংগ্রাম করতে হবে। মাতৃভাষায় অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি অধ্যবসায়, নম্রতা ও সততার মূল্যবোধকে প্রাধান্য দিয়েছিলন। তিনি শিখেছিলেন; জীবনের একমাত্র উপায় হলো শিক্ষা। এই উপলব্ধি থেকেই তিনি সেন্ট আন্থনি কলেজ থেকে স্নাতক শেষ করার পর তিনি আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে মাস্টাস অধ্যয়নের জন্য আসামের ডিব্রুগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন। পরে তিনি আইন বিষয়ে ডিগ্রী প্রাপ্ত হন। রাজনীতিতে যোগ দেবার আগে পি এ সাংমা কর্মজীবনে একজন প্রভাষক, আইনজীবী এবং সাংবাদিকতা পেশায় যুক্ত ছিলেন।
বর্ণাঢ্য রাজনীতিতে পি এ সাংমা একজন বহুমুখী প্রতিভাধর এবং অসাধারণ ব্যক্তিত্বের অধিকারী ছিলেন। গৌরবের স্বীকৃতি, সাধীনতা ও মর্যাদার জন্য তিনি অসামান্য সংসদ সদস্যের খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। তিনি সকল রাজনৈতিক দলগুলির স্পিকার হিসাবে শপথ গ্রহণ করে উভয় পক্ষের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছিলেন। তিনি দুই বছরেরও কম সময়ের মধ্যে একটি সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে লোক সভার স্পিকারের কার্যালয়ে তাঁর ব্যক্তিত্বের অবিচ্ছেদ্য এবং অমলিন ছাপ রেখে যান। তাঁর হাসিখুশি, দ্রুত বিচলিততা, অসীম উৎসাহ, নিখুঁত শৃঙ্খলা ও ধার্মিক বুদ্ধিমত্তায় তিনি একটি জায়গায় পৌচ্ছে গিয়েছিল; সারা দেশ থেকে মানুষ বিরল দক্ষতার প্রশংসা করে; যার ফলে তিনি হাউজ এর কার্যধারা পরিচালনা করতে সক্ষম হন। এছাড়াও বিভিন্ন মিডিয়াতেও, স্পিকার হিসেবে তাঁর মেয়াদ অত্যন্ত প্রশংসা করা হয়।
২০১৬ সালের ৪ঠা মার্চ সকালে দিল্লিতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৮ বছর। জীবনাবসানের মধ্য দিয়ে এই প্রতিভাধর গারো রাজনীতিবিদের বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটে। ২০১৭ সালে ভারত তাঁকে মরণোত্তর পদ্মবিভূষন সম্মানে ভূষিত করেন। তাঁর সুদীর্ঘ বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে রেখে গেছেন সুযোগ্য, গুনী রাজনীতিবিদ; যা এখন তাঁর পদাঙ্ক অনুসরণ করছেন। (সূত্র:এসটি)