আন্তর্জাতিক নিউজ ডেস্ক: করোনা ভাইরাসের ধাক্কা সামলিয়ে ফ্রান্সে কর্মচাঞ্চল্য কিছুটা স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে শুরু করেছে এ দেশের নানা পেশাজীবি মানুষ। দেশটিতে স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটি চালু থাকলেও বিভিন্ন অফিস পুরোদমে আবার স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে এ মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে।
এ ছাড়াও গতকাল ছিল ফ্রান্সে জাতীয় মিউজিক উৎসব। যাকে ফ্রেঞ্চে বলা হয় ‘ফ্যাট দ্যো লা মিউজিক’ (Fête de la Musique)। প্রতি বছর এ উৎসবকে ঘিরে উঠতি বয়সীদের কাছে আলাদা কদর রয়েছে। কিন্ত করোনার দরুন সরকারি বিধি নিষেধ আরোপের ফলে এ বছরও ওফেনসিভ বা উদ্যমে নেচে গেয়ে উৎযাপন করতে না পারলেও রেষ্টুরেন্ট কিংবা ঘরোয়া আয়োজনে স্বজন, বন্ধু বান্ধবীদের সঙ্গে গেল বছরের কিছু ঝাল মিটিয়েছে মিউজিক প্রেমিরা। প্রতিটা রেষ্টুরেন্টের ভেতর এবং বারান্দা/টেরাস ছিল মানুষে মানুষে ঠাসা।
প্যারিস চার, রুই দ্যা রিভোলির একটি রেষ্টুরেন্টের দৃশ্য
প্যারিস শহরের অলিতে গলিতে গতকাল দুপুরে রেষ্টুরেন্টগুলো দৃশ্যত মনে হয়েছিল কোভিড ১৯ এর আগের কোন একটা দুপুর ঈশ্বর যেন ফরাসীদের ফিরিয়ে দিয়েছেন। কি দারুন ঝলমলে রোদ ছিল। রেষ্টুরেন্টের ভেতর বাহির সিট নেই তবুও স্বজন নিয়ে রেষ্টুরেন্টে খাবার খেতে বাইরে দাঁড়িয়ে আছেন ঘন্টার পর ঘন্টা। তাছাড়া স্যামার সিজিনটা ফরাসীদের প্রিয়। এদেশে প্রায় ৯ মাস শীত থাকে। রৌদ্রজ্জ্বল দুটি মাস সবাই প্রিয়জনদের সঙ্গে ভাগাভাগি করে কাটাতে চায়। এমন সময়কে এক মুহুর্তের জন্যেও মিস করতে রাজি নন। ফরাসীরা মূলত আয়েসি স্বভাবের। স্বজনদের নিয়ে আয়েস করতে খুব ভালোবাসেন তারা।
বিশ্ব রেকর্ড অনুযায়ী ফ্রান্সে গত ২০ জুন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছে ৫২ লাখ ৯৬ হাজার ২২২ জন এবং মারা গেছে এক লাখ এক হাজার ১৮০ জন। এ দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার হার দুই শতাংশ এবং সুস্থ হওয়ার হার ৯৮ শতাংশ। জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটির দেওয়া তথ্যানুসারে, ফ্রান্সে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়েছে ৪১ লাখ ৫১ হাজার ২৮৯ জন।
দেশটিতে বর্তমানে করোনায় আক্রান্ত অবস্থায় রয়েছে ১০ লাখ ৪৩ হাজার ৭৫৩ জন। তার মধ্যে পাঁচ হাজার ৯৭০ জনের অবস্থা গুরুতর এবং বাকিদের অবস্থা স্থিতিশীল। বিশ্বে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় সবার ওপরে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এই তালিকায় ফ্রান্স রয়েছে চতুর্থ অবস্থানে।
করোনা প্রতিরোধে ভ্যাকসিন কার্যক্রম চলমান রেখেছে দেশটির সরকার। দ্রুত ভ্যাকসিন কার্যক্রম সফল করতে জনগণের দৌড়গোড়ায় সেবা পৌঁছে দিতে সরকারী এবং বেসরকারী বিভিন্ন সংস্থাগুলো একযোগে কাজ করছে।