বাপন নেংমিঞ্জা, শেরপুর: রেভা ফা. আলেক্স রাবানল সিএসসি। তিনি মরিয়মনগর তথা সকল গারো এলাকায় আচ্চু ফাদার নামে পরিচিত। ফাদার আলেক্স রাবানল সিএসসি শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতি থানার মরিয়ম নগর মিশনে পালপুরোহিত হিসেবে যোগ দান করেন ১৯৯৯ সালে।
ধর্ম যাজক আলেক্স রাবানল সিএসসি’র সাধু জর্জ এর ধর্মপল্লী মরিয়মনগরে আগমন একসময় হয়ে উঠে একটি আশীর্বাদ। তিনি এই ধর্মপল্লীর উন্নয়নে অগ্রণী ভুমিকা পালন করেন। এলাকার শিক্ষার, আধ্যাত্মিকতার ও সর্বপরী গারো আদিবাসীদের জীবন মান উন্নয়নে তাঁর অবদান প্রশংসার দাবি রাখে।
শ্রদ্ধ ও স্মরণানুষ্ঠ সূচী
তাঁর জন্ম ফিলিপাইনে, ১১ জানুয়ারী ১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দে । তিনি প্রথম ব্রত গ্রহণ করেন ২৬ অক্টোবর ১৯৮৪ সালে। ১৯৮৮ সালে তিনি দায়িত্ব পেয়ে প্রথম গারো অঞ্চল টাঙ্গাইল জেলাধীন মধুপুর থানাস্থ জলছত্র মিশনে আসেন । এ যাজক মূলত গারো এলাকায় কাজ করতে করতে একসময় গারো আদিবাসীদের উপর দুর্বল হয়ে পড়েন। তিনি এক সময় গারো আদিবাসীদের মাহারী ‘দফো’ গ্রহণ করেন ।
মরিয়মনগর মিশনে পরিচিত এই আচু ফাদার শুধু এলাকা বা মানুষের উন্নয়নই করেন নি । মরিয়মনগর মিশনের দুর্গম এলাকায় যাতে খ্রীষ্টিয় কাজ আরও সুন্দরভাবে করা যায় সেটিকে লক্ষ রেখে ঝিনাইগাতী থানার পশ্চিম দুর্গম গ্রাম দিগলা কোনায় আরেকটি মিশন স্থাপন করেন। যা বর্তমানে দিগলাকোনা মিশন হিসেবে পরিচিত এবং মিশনটি বর্তমানে ময়মনসিংহ ধর্মপ্রদেশের অধীনে রয়েছে। ২০১৮ সালে তিনি অবসর গ্রহণ করে ঢাকা রামপুরার বনশ্রীর মরো হাউজে চলে যান। এরপর তিনি ৩রা এপ্রিল ২০২২ খ্রিস্টাব্দে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
ফাদার আলেক্স রাবানল মূলত মরিয়মনগর এলাকায় তার অবদানের কারনে জনমনে এখনও বেঁচে আছেন। তাঁর মৃত্যুতে শোকাহত মরিয়মনগরবাসী। তাঁর মৃত্যুর পর গারো রীতিতে শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। তাঁর শ্রদ্ধানুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে আগামী ০৪, এবং ০৫ নভেম্বর ২০২২। স্মৃতিচারণ, সংকীর্তন ও খ্রীস্টযাগের মাধ্যমে এই শ্রাদ্ধানুষ্ঠানটি সফল করতে এলাকায় এখন চলছে জোর প্রস্তুতি ।
এই শ্রাদ্ধ ও স্মরণানুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠানের আহবায়ক অসীম ম্রং আ.বিমা টাইমসকে বলেন, আমরা আচ্চু ফাদার এবং তাঁর স্মৃতিকে এখনও মনের ভেতর গেঁথে রেখেছি। তাঁর অসীম অবদানের কথা বলে শেষ করা যাবে না। তাই আমরা আমাদের গারো রীতিতে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছি। মিডিয়া ও ডকুমেন্টেশন কমিটির আহবায়ক হেমার্শন চিরান বলেন, আমরা এই অনুষ্ঠানকে সফল করার জন্য বিভিন্ন ধরণের উদ্যোগ হাতে নিয়েছি। তাছাড়া প্রথমবারের মতোন অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই অনুষ্ঠানকে ঘিরে আমরা কিছু ডিজিটাল প্রযুক্তিরও সহায়তা নিচ্ছে, যাতে করে আচ্চু ফাদারের স্মৃতিকে আমরা আগামী প্রজন্মের জন্যও রেখে দিতে পারি।