ওয়েলসন নকরেক, মধুপুর, টাঙ্গাইল: দোখলার আমতলী বাইদে আদিবাসীদের কৃষি জমিতে কোনোভাবেই কৃত্রিম লেক খনন করতে দেওয়া হবে না। যেকোনো মূল্যে লেক খনন প্রতিহত করা হবে বলে প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন আদিবাসী ছাত্র ও যুব নেতারা। আজ ৮ জুন বুধবার টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার দোখলা চৌরাস্তা মোড়ে ‘সম্মিলিত আদিবাসী ছাত্র-জনতা’র ব্যানারে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে বনবিভাগ কর্তৃক কৃত্রিম লেক খনন প্রকল্পের কঠোর সমালোচনা করেন।
দোখলায় লেক খননে নির্ধারিত কৃষি জমি ও সাইন বোর্ড
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেছে ছাত্র নেতা জন জেত্রা, সভাপতি, বাংলাদেশ গারো ছাত্র সংগঠন (বাগাছাস)। সমাবেশ সঞ্চালনা করেছে ছাত্র নেতা লিয়াং রিছিল, সাধারণ সম্পাদক, গারো স্টুডেন্ট ফেডারেশন।
আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ’র সাধারণ সম্পাদক অলিক মৃ বনবিভাগের উদ্দেশ্যে বলেন, “হামলা-মামলার ভয় দেখাবেন না। মধুপুরের আদিবাসীদের নামে শত শত মামলা রয়েছে। তাতে কি অধিকার আদায়ের আন্দোলন থেমে গেছে? হামলা-মামলার ভয় দেখিয়ে আন্দোলন থামানো যাবে না।” আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে লেক প্রকল্প বাতিল ঘোষণা না করলে পৃথিবীর যে যে জায়গায় আদিবাসী ছাত্র-যুবক আছে সেই প্রান্তে আন্দোলন জোরদার করা হবে বলে তিনি প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
আদিবাসী যুব ফোরাম’র সাংগঠনিক সম্পাদক টনি ম্যাথিউ চিরান তার বক্তব্যে বলেন, “বনবিভাগ নিজে বন ধ্বংস করে আদিবাসীদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়। যেখানে আদিবাসী নাই সেখানে বন নাই। তিনি আরো বলেন, “প্রয়োজনে প্রাণ দেবো তবু আদিবাসীদের কৃষি জমিতে লেক খনন করতে দেওয়া হবে না।”
জমির মালিকদের মধ্যে অন্যতম কৌশলা নকরেক গারো ভাষায় দেওয়া তার বক্তব্যে, “পীরেন স্নাল যেভাবে প্রাণ দিয়েছে আমরাও সেভাবে প্রাণ দেবো তবু আমাদের জমিতে লেক খনন করতে দেবো না।”
সমাবেশে বক্তব্য রাখচ্ছেন জমির মালিক কৌশলা নকরেক
সমাবেশের আগে সকাল ১০টায় ভূটিয়া বাজার থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে সমাবেশ স্থল দোখলা চৌরাস্তা মোড়ে এসে শেষ হয়।
উল্লেখ্য টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার দোখলা আমতলী বাইদে আদিবাসীদের কৃষি জমিতে বনবিভাগ কর্তৃক লেক প্রকল্প ঘোষণা করার পর থেকে আদিবাসী – বনবিভাগ পরস্পর সাংঘর্ষিক অবস্থানে রয়েছে। লেক প্রকল্পের মধ্যে ১৩টি আদিবাসীর জমি রয়েছে। শুরু থেকেই জমির মালিকসহ আদিবাসীরা এই কৃত্রিম লেক খনন প্রকল্পের বিরোধীতা করে আসছেন। তাদের দাবি ওই জমিতে লেক খন করা হলে আদিবাসীদের একমাত্র আবাদি জমি হারাবে। এছাড়াও লেকের চারপাশে অবস্থিত আদিবাসীদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যহত হবে। সামাজিক, সাংস্কৃতিক পরিবেশ বিপর্যস্ত হবে।