সাবেক এমপি গোলাম মাওলা রনি বাংলাদেশের একজন বাকপটু, এবং বিজ্ঞ বিশ্লেষকও বটে। ফলে তাঁকে দেশে চেনে না এমন লোক কম পাওয়া যাবে। একদিকে তিনি পেশাদার রাজনীতিবিদ, অন্যদিকে ফেসবুক কিংবা ইউটিউব সহ অন্যান্য সোস্যাল মিডিয়াতেও অত্যন্ত সরব এবং সুপরিচিত মুখ।
তিনি যেমন তুখোড় রাজনীতিবিদ, বিশ্লেষক; আবার নানা কারনেও রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচিত এবং সমালোচিত। তিনি তাঁর অসাধারণ মেধায় সমসাময়িক দেশীয় রাজনীতি, অতীত ইতিহাস এবং আন্তর্জাতিক, বৈশ্বিক ইত্যাদি বিষয় বিভিন্ন সময়, নানা আঙ্গিকে ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করে থাকেন যা যৌক্তিক বলে প্রশংসার দাবি রাখে; আবার কখনোবা অনেকের কাছে হাস্যকর বলেও প্রতীয়মান হয়।
তিনি আজ নিজেই ফেবু স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘আমার মনে হচ্ছে- সরকার প্রথম আলোর সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের ঘটনাটিকে এসিড টেস্ট হিসাবে ব্যবহার করবে। এতে সরকারী দলের অনেক নেতার কপাল পুড়বে । এই ক্ষেত্রে বেশি কপাল পুড়বে সেইসব দলবাজ সাংবাদিকের যারা এতোদিন প্রধান মন্ত্রীর দয়া, অনুগ্রহ এবং করুণা নিয়েছেন কিন্তু এখন বুদ্ধিজীবী সেজে রোজিনার পক্ষে কথা বলছেন ।
সরকার চাচ্ছে – তাদের মন্ত্রী-এমপি, নেতা এবং সুবিধাভোগী সাংবাদিক-বুদ্ধিজীবীরা শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী নওফেলের মতো স্পষ্ট কথা বলুক। কারন প্রথম আলো – ডেইলি সটার নামক পত্রিকা দুটোকে প্রধানমন্ত্রী দেখতে পারেন না । এই দুই পত্রিকার সম্পাদক যথা মতিউর রাহমান বাচ্চু এবং মাহফুজ আনাম তিতুমিয়াকে প্রধান মন্ত্রীর বাক্তিগতভাবে কেমন জানেন তা যদি তার দলের লোকজন না বুঝে তবে পরিণতি কি হতে পারে তা সহজেই অনুমান করা যায় ।
অনেকে আইন কানুন, নীতি নৈতিকতা এবং দেশ বিদেশে ভাব মূর্তির কথা বলেন । সরকার মনে করে – ক্ষমতা থাকলে ওসব কিছুরই দরকার হয়না । ইসরাইল আল জাজিরার ভবন গুড়িয়ে দিল । মিশর-সৌদি আরব বিশ্ব বিখ্যাত সাংবাদিকদেরকে তো মেরেই ফেললো । তাদের ভাবমূর্তির কি কিছু হয়েছে । উলটো পশ্চিমারা তাদের তাঁবেদারি করছে ।
বাংলাদেশে ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনের পর যারা সরকারের পিঠা পায়েস খেয়েছে তারা যদি এখন নীতি কথা এবং ভাবমূর্তির কথা বলে তবে তা জনগণ মেনে নিলেও আওয়ামীলীগ মানবেনা । আওয়ামীলীগ চায়- হয় শত্রু হও এবং আমাদের বিরুদ্ধে লড়াই কর। আর যদি বন্ধু হও তবে যা চাইব তা কোন প্রশ্ন ছাড়াই মেনে নাও, প্রচার কর এবং আমদের শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াই কর ।‘
করোনাকালে সরকার, সরকারী কর্মকাণ্ড এবং সরকারী আমলাদের তিনি মাঝে মধ্যেই টিপুনি দিয়ে বুঝিয়ে দেন। প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের ঘটনাটিকে ‘এসিড টেস্ট’ বলতে তিনি কি বুঝিয়েছেন বোধ করি অনেকেই তা ভালো বুঝবেন।