আ.বিমা টাইমস নিউজ ডেস্ক: সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় এক হাজং আদিবাসী নারীকে ধর্ষণের ঘটনায় বিলম্বে মেডিকেল পরীক্ষা এবং ফলশ্রুতিতে নেগেটিভ ফলাফল আসার প্রেক্ষাপটে প্রশাসন ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দের ভূমিকায় উদ্বেগ জানিয়েছে হাজং আদিবাসীদের দু’টি সংগঠন। ৫ সেপ্টেম্বর রবিবার বাংলাদেশ জাতীয় হাজং সংগঠন ও বাংলাদেশ হাজং ছাত্র সংগঠন এক যৌথ বিবৃতির মাধ্যমে  উদ্বেগ জানিয়ে এ ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত এবং বিচার দাবি করেছে।

বাংলাদেশ জাতীয় হাজং সংগঠন এর সাধারণ সম্পাদক পল্টন হাজং এবং বাংলাদেশ হাজং ছাত্র সংগঠন এর সাধারণ সম্পাদক আশীষ হাজং স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমকে পাঠানো ঐ বিবৃতিতে বলা হয়, গত ১৪ আগস্ট সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর থানাধীন সীমান্তবর্তী রাজাই গ্রামের হাজং আদিবাসী তরুণী (২৩) সকালে পার্শ্ববর্তী একটি ছড়ায় গোসল করার সময় ঐ গ্রামের

আবুল কালামের ছেলে আব্দুল রাশিদ (৪৫) কর্তৃক ধর্ষণের শিকার হন। ঐ দিনই এ ধর্ষণ ঘটনায় ভিকটিমের মায়ের অভিযোগে তাহিরপুর থানায় একটি মামলা হয়। দাযেরকৃত মামলা নং ১২, তারিখ ১৪/০৮/২০২১ খ্রি: ধারা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী ২০০৩) এর ৯ (১)। এই মামলাটির তদন্তের দায়িত্বে আছেন তাহিরপুর থানার সাব-ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) আবু বকর সিদ্দিক ।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ঘটনার পরদিন ১৫ আগস্ট দুপুরের মধ্যে সুনামগঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে ভিকটিমের মেডিকেল পরীক্ষা করায় থানা কর্তৃপক্ষ। পরীক্ষার ১৬ দিন পর গত ১ সেপ্টেম্বর থানা থেকে জানা যায়, ধর্ষণের মেডিকেল পরীক্ষার ফলাফল নেগেটিভ এসেছে অর্থাৎ উক্ত পরীক্ষার ফলাফল অনুসারে ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়নি। কিন্তু আদিবাসী নারীর প্রতি ধর্ষণের এ সত্য ঘটনায় এরকম নেগেটিভ ফলাফল শুনে ভিকটিম ও তার পরিবার সকলেই অত্যন্ত হতবাক হয়েছেন বলেও বিবৃতিতে বলা হয়।

জাতীয় হাজং সংগঠন ও বাংলাদেশ হাজং ছাত্র সংগঠন উক্ত মেডিকেল পরীক্ষার ফলকে ভুল ও সন্দেহজনক উল্লেখ করে এই ফলাফল প্রত্যাখান করে। বারবার ভিকটিম ও তার পরিবারের সাথে কথা বলে নিশ্চিত হয়ে ধর্ষণের ঘটনাটি সত্য ছিল বলে দাবি করে সংগঠন দুটি।

বিবৃতিতে সংগঠন দু’টি নিম্নোক্ত দাবিগুলো উত্থাপন করে-

১. সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে ধর্ষণের শিকার আদিবাসী তরুণীর মেডিকেল পরীক্ষায় কোন অবহেলা ও ফলাফলে প্ররোচনা হয়ে থাকলে তা খুঁজে বের করে এর সাথে সংশ্লিষ্ট অভিযুক্তদের শাস্তির আওতায় নিয়ে আসতে হবে।

২.ধর্ষণে অভিযুক্ত আসামী আব্দুল রাশিদকে রক্ষার কোন ষড়যন্ত্র হলে তা শক্তভাবে প্রতিহত করতে হবে।

৩. ঘটনাটি নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে অভিযুক্ত আসামীকে দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করতে হবে।

৪. দরিদ্র, অসহায় ক্ষতিগ্রস্ত ভিকটিম ও তার পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

৫. ক্ষতিগ্রস্ত নারীর মানসিক অবস্থা জোরদার করণের জন্যে কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা গ্রহণ এবং মামলা পরিচালনায় আইনী সহায়তা প্রদান করতে হবে।