বর্তমানে জনপ্রিয়তায় ছোট পর্দা মানেই ইউটিউব। শুধুমাত্র ভিডিও দেখা নয়; অনলাইনে আয় করার সুযোগদানকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে ইউটিউবের কদর এখন সর্বাগ্রে। গত কয়েক বছরে ইউটিউব ব্যবহারকারী যেমন বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে ব্যাপক হারে ইউটিউবের ক্রিয়েটরদের সংখ্যাও। এ প্ল্যাটফর্মে রীতিমত পেশাদার অপেশাদার ক্রিয়েটরদের মিশেল সহাবস্থান। এর ফলে পেশাদাররা আরও পেশাদার হয়ে উঠছে এবং অপেশাদার, নতুন ক্রিয়েটর হিসেবে নিজেকে তৈরি এবং নিজের মেধাকে ফোকাশ করার দুর্দান্ত সুযোগও রয়েছে প্ল্যাটফর্মটিতে।
ইউটিউব ব্যবহারকারী ও ক্রিয়েটরদের নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে ইউটিউব নিজেরাই হিমশিম খেয়ে যাচ্ছে। আর তাই ইউজারদেরকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য প্রতিনিয়ত তাদের মূল নীতিমালা পরিবর্তন এনে থাকেন। একটা সময় ইউটিউবে শুধু একাউন্ট খুলে, ভিডিও আপলোড করলেই টাকা উপার্জন করা যেতো। কিন্তু এই সুযোগ পেয়ে অনেকেই এর অপব্যবহারও করেছেন। আপনি যদি ইউটিউব থেকে আয় করতে চান তাহলে ইউটিউব কর্তৃপক্ষের আরোপিত নীতিমালাসহ খুঁটিনাটি বিষয় জানতে হবে এবং শতভাগ নিয়ম মেনে ইউটিউব থেকে আয় করতে পারেন। তা না হলে আজ অথবা কাল আপনি হোছট খেয়ে ছিটকে পড়বেন ইউটিউব ক্যারিয়ার থেকে।
ইউটিউব ক্রিয়েটর হিসেবে যে নিয়মাবলী এবং যা জানা খুবই প্রয়োজন, যেমন-
১। যে কেউ ইউটিউব চ্যানেল ক্রিয়েট করতে পারেন; তবে মনিটাইজেশান আবেদন করতে হলে ক্রিয়েটরের বয়স মিনিমাম ১৮ হতে হবে।
২। ১২ মাসের ভেতরে আপনার সব ভিডিও ভিউ মোট ৪০০০ ঘন্টা ওয়াচ আওয়ার, ১০ হাজার ভিউস এবং আপনার মোট ১০০০ সাবস্ক্রাইবার হতে হবে।
৩। একই ইমেল অথবা টেলিফোন নম্বর দিয়ে একাধিক চ্যানেল খোলা যেতে পারে; তবে একটি মাত্র মোবাইল টেলিফোন নম্বর এবং ইমেল দিয়ে কেবলমাত্র একটি গুগল এ্যাডসেন্স একাউন্টস করা যাবে।
৪। কনটেন্ট এ কপিরাইট ক্লেইম বা কপিরাইট স্ট্রাইক ইস্যূা থাকতে পারবে না (ভিডিও ফুটেজ, অডিও, ইমেজ ইত্যাদি)।
৫। কনটেন্ট অশ্লীল, হ্যাকিং, রাষ্ট্রবিরোধী, উস্কানিকমূলক ইত্যাদি হতে পারবে না।
৬। ইউটিউব এর অলগারিদমনুযায়ী অর্গানিক ভিউস বা ইউজার, সাবস্ক্রাইবার থাকতে হবে।
৭। ইউটিউব নীতিমালানুযায়ী চ্যানেল সেটিংক্স, ডেস্ক্রিপশান, লগো, ব্যানার, থামনাইল, টেগ বা হ্যাস টেক, টাইটেল ইত্যাদি অর্থাৎ মনিটাইজেশান ভেরিফিকেশানের উপযুক্ত হতে হবে।
আপনি যদি এদত বিষয় অবগত হয়ে ইউটিউব চ্যানেল পরিচালনা করেন, ইউটিউব কমিউনিটি গাইডলাইন মেনে চলেন তাহলে ইউটিউব প্ল্যাটফর্মকে একটি অন্যতম ক্যারিয়ার হিসেবে নিতে পারে। বেকার ছাত্র, চাকুরিজীবীরাও চাকরীর পাশপাশি অর্থ উপার্জন করতে পারেন। ইউটিউব কমিউনিটি গাইডলাইন না মেনে চললে ইউটিউবে টিকে থাকা সহজ নয়। মনে রাখতে হবে আপনাকে কিছু যোগ্যতা অর্জন করে এবং ইউটিউব কমিউনিটি গাইডলাইন মেনে এখানে টিকে থাকতে হবে। মোদ্দা কথা ইউটিউব চায়, ইউটিউবাররা তাদের নিয়মগুলো মেনে চলুক। আর সেটা নিয়ন্ত্রণ করতেই ইউটিউব কর্তৃপক্ষ বারংবার তাদের নিয়ম পরিবর্তন পরিমার্জন করে যাচ্ছে এবং ভবিষ্যতে আরও কঠোর হতে পারে।