আ.বিমা টাইমস নিউজ, টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইলের সখীপুরে কোচ নারী (৪০) সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন গত ১০ জুন বৃহস্পতিবার। ধর্ষণ ও সংঘবদ্ধচক্রসহ আসামীদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে আজ মঙ্গলবার (১৫ জুন ২০২১) টাঙ্গাইল সদর প্রেসক্লাবের সমানে সকাল ১১টায় ‘বাংলাদেশ কোচ আদিবাসী ইউনিয়ন’ ব্যানারে বিভিন্ন আদিবাসী সংগঠনগুলো সম্মিলিতভাবে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেন।
মানববন্ধন কর্মসূচি সঞ্চালনায় সদস্য সচিব (কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটি) বকুল চন্দ্র বর্মন এবং রতন কোচ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভিন্ন আদিবাসী সংগঠনের প্রায় দুই শতাধিক নেতা কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগতিক বক্তব্য রাখেন রতন কুমার রায়, যুগ্ন আহ্বায়ক (বাংলাদেশ কোচ আদিবাসী ইউনিয়ন), এরপর আরও বক্তব্য রাখেন বাগাছাস সভাপতি জন যেত্রা, সাধারণ সম্পাদক অলিক মৃ (বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ), সাধারণ সম্পাদক লিয়াং রিছিল (জিএসএফ), বিশ্বজিৎ কোচ, যুগ্ন-আহ্বায়ক (বাংলাদেশ কোচ আদিবাসী ইউনিয়ন), চন্দন কোচ, যগ্ন-আহ্বায়ক (বাংলাদেশ কোচ আদিবাসী ইউনিয়ন), স্বপন কোচ, সদস্য (বাংলাদেশ আদিবাসী যুব ফোরাম), অনিল চন্দ্র কোচ, চেয়ারম্যান (ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশান), স্বপন কুমার কোচ এবং রানেল মানখিন প্রমুখ।
কর্মসূচীতে সকল বক্তারা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, গণতান্ত্রিক দেশে এমন মধ্যযুগীয়, বর্বর এবং জঘন্যতম ঘটনা স্বাধীন সার্বভৌম দেশে কখনো কাম্য হতে পারে না। ফলে অনতিবিলম্বে উপরোল্লেখিত অসামীদের দ্রুত গ্রেফতার করে মহামান্য আদালতের বিচারিক প্রক্রিয়ায় তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে এ মানববন্ধনের মাধ্যমে জোর দাবি তাঁরা জানান। দাবিগুলোর মধ্যে যেমন-অবিলম্বে দোষী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও আইনের আওতায় আনতে হবে, ধর্ষকদের দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালের মাধ্যমে বিচার করতে হবে, ধর্ষকদের ফাঁসি চাই, আইনের শাসন নিশ্চিত করতে হবে, ঘৃণ্য ও পৈশাচিক অপরাধের সাথে জড়িত সকল আসামীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে ইত্যাদি।
মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করেন- বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ, বাংলাদেশ গারো ছাত্র সংগঠন (বাগাছাস), গারো স্টুডেন্ট ফেডারেশান (জেএসএফ), ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশান (ঘাটাইল উপজেলা, (বাংলাদেশ আদিবাসী যুব ফোরাম)) এবং মধুপুর আ.বিমা ফেস্টিভাল কমিটি।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার রাতে টাঙ্গাইল জেলার সখিপুর উপজেলার হাতিবান্ধা ইউনিয়নের বাজাইল বড়চালা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এরপর গুরুতর আহত অবস্থায় ওই নারীকে প্রথমে সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রথমে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে আহত ওই নারী টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) চিকিৎসাধীন।
ওই ঘটনায় শিকার নারীর দেবর গণমাধ্যমকে জানান, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে একই এলাকার টেংগু সরকারের ছেলে দীনা সরকার (৩৩), নারায়ণ চন্দ্র সরকারের ছেলে মন্টু সরকার (৩০) ও ময়নাল মিয়ার ছেলে শবদুল মিয়া (২৮) দেশি চোলাই মদ পান করে তাদের বাড়িতে যায়। এরপর ওই নারীকে ঘর থেকে ডেকে বের করে পাশের একটি ফাঁকা জায়গায় নিয়ে তিনজনে মিলে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের এক পর্যায়ে দীনা সরকার ওই নারীর মুখমণ্ডলসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে কামড়ে গুরুতর আহত করে। এছাড়াও গোপনাঙ্গ ও পায়ুপথ ছিঁড়ে ফেলে। ওই নারীর চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এলে ওই তিনজন দৌড়ে পালিয়ে যায়।
অভিযোগের ভিত্তিতে ইতোমধ্যে দু’জন আসামীকে গ্রেফতার করেছে সখীপুর থানা পুলিশ এবং অন্য একজন এখনো পলাতক বলে মানবন্ধনে বক্তারা প্রশ্ন তুলে উল্লেখ করেন।