আ.বিমা টাইমস নিউজ ডেস্ক: নেত্রকোণার সুসং দূর্গাপুর উপজেলার কুল্লাউড়া ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও আদিবাসী গারো সমাজের উদীয়মান নেতা সুব্রত সাংমার হত্যাকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতার, দ্রুত বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৫ অক্টোবর শনিবার সকালে ঢাকার শাহবাগে ‘ঢাকায় বসবাসরত আদিবাসী জনগণ’ এর ব্যানারে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য সাংবাদিক নিখিল মানখিনের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন (টিডব্লিউএ) ঢাকা মহানগর শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট অটুট আরেং, বাড্ডা ওয়ানগালার সাবেক নকমা সাইলেন রিছিল, গারো স্টুডেন্ট ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নিপুন মানখিন, সম্প্রীতি বাংলাদেশ নেত্রকোনা জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সুবিমল ম্রং, টিডব্লিউএ গুলশান থানা শাখার চেয়ারম্যান যোয়াকিম মানখিন প্রমুখ।
সাংবাদিক নিখিল মানখিন বলেন, “সাবেক সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী প্রয়াত প্রমোদ মানকিনের ভাতিজা সুব্রত সাংমা স্থানীয় আওয়ামী লীগের একজন বলিষ্ঠ নেতা ছিলেন। উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আউয়াল এলাকায় সন্ত্রাসী বাহিনী গঠন করে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। অবৈধ সীমান্ত চোরা চালান ব্যবসাসহ নানা অপরাধমূলক কাজে লিপ্ত আব্দুল আওয়াল। আওয়াল বাহিনীর অপকর্মের বিরোধিতা করে আসছিলেন সুব্রত সাংমা। শেষ নাগাদ তিনি খুন হলেন। আওয়াল সন্ত্রাসী বাহিনীর আগ্রাসন ও নিপীড়ন থেকে জনগণকে রক্ষা করতে, এলাকাকে অপরাধমুক্ত রাখতে গিয়ে প্রাণ দিয়েছেন জনপ্রিয় ইউপি চেয়ারম্যান, আদিবাসী নেতা সুব্রত সাংমা।” সুব্রত হত্যা মামলার সকল আসামীর দ্রুত গ্রেফতার, বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তিনি।
নেত্রকোনা জেলার দুর্গাপুর উপজেলার ১নং কুল্লাগড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান সুব্রত সাংমা (৪৮)কে ২৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় উপজেলার রাশিমণি বাজার এলাকায় সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে গুরুতর আহত করা হয় । তাকে রাত সাড়ে ৮টার দিকে চিকিৎসার জন্য মোটরসাইকেলে করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হচ্ছিল। পথে শিবগঞ্জের সোমেশ্বরী নদীর ঘাট এলাকায় পৌঁছালে দ্বিতীয় দফা হামলার শিকার হন তিনি। এ সময় তাকে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। সুব্রত সাংমাকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। ঘটনার ৯দিন পর গত ৮ অক্টোবর দুপুর সোয়া ১২টায় সেখানেই মারা যান তিনি।
হামলার ঘটনায় রাতেই দুর্গাপুর থানায় মামলা করেন সুব্রত সাংমার বোন কেয়া তজু। মামলায় বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান, দুর্গাপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আওয়াল, তার দুই ভাই শামীম মিয়া ওরফে শুটার শামীম ও বদিউজ্জামানসহ ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ১৬ জনকে আসামি করা হয়। আদিবাসী নেতা সাবেক এই ইউপি চেয়ারম্যানের মৃত্যুতে স্থানীয়দের মাঝে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে।
সর্বশেষ ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসাবে সুব্রত নির্বাচনে অংশ নিয়ে পরাজিত হন। তবে এর আগে কুল্লাগড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য সুব্রত নৌকা প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন।