নিজস্ব প্রতিবেদক, টাঙ্গাইল: নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে উদপিত হলো আ.বিমা ওয়ানগালা। ৪ঠা নভেম্বর শুক্রবার টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার আমলীতলা খেলার মাঠে ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানসহ নানা আয়োজন ছিল গারোদের এই আদি উৎসবে। সকাল ১০.৩০টায় রাক্কাসি দেবতার উদ্দেশ্যে আমুয়া (পূজার) মাধ্যমে উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এরপর ক্রমান্বয়ে পালিত হয় রুগালা, গোরেরোয়া ও কামাল গ্রিকা। দিনব্যাপী এই আয়োজনে সভাপতিত্ব করেন সাংসারেক কমিউনিটির নকমা ওয়ারি নকরেক মারাক। পুরো অনুষ্ঠান জুড়ে সঞ্চালনায় ছিলেন সতীর্থ চিরান ও রেশা চাম্বুগং।

বিকালে অতিথি পর্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ময়মনসিংহ -১(হালুয়াঘাট, ধোবাউরা) আসনের সংসদ সদস্য জুয়েল আরেং। সাংসদ জুয়েল আরেং তাঁর বক্তব্যে সাংসারেক কমিউনিটির শিকড় খুঁজার প্রয়াসকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। সাংসারেক কমিউনিটি যেন গারোদের হারিয়ে যাওয়া কৃষ্টি-সংস্কৃতি নতুন প্রজন্মদের কাছে সঠিকভাবে তুলে ধরতে পারে জুয়েল আরেং সেই আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাউথ এশিয়ান এসোসিয়েশন ফর রিজিওনাল কো-অপারেশন(সার্ক) এর অর্থনীতিবিদ আবুল কাসেম, মধুপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি এডভোকেট মোহাম্মদ ইয়াকুব আলী, মধুপুর উপজেলা পরিষদ’র মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান যষ্ঠিনা নকরেক, অরণখলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: আব্দুর রহিম, জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদ এর সভাপতি ইউজিন নকরেক প্রমুখ।

এরপর বিকালে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে পারফর্ম করে শিল্পী সবুজ মাজি, যাদু রিছিল, ঢাকা কালচারাল একাডেমি, মময়মনসিংহ কালচারাল গ্রুপ। রাতে স্পেশাল কন্সার্টে মূল আকর্ষণ মেঘালয়ের ব্যান্ড ‘দা সুরাকা’ একে একে পরিবেশন করে মাইনা, রান্দি মিকচি, আম্বি, রিপেং এবং নতুন রিলিজ হওয়া জারাম্বং শিরোনামের গান। বাংলাদেশের ব্যান্ডগুলোর মধ্যে পারফর্ম করে মাদল, জুমাং, সাক্রামেন্ট এবং হিভক্লো ব্যান্ড।

গারোদের বিশ্বাস মতে শস্যদেবতা ‘মিসি সালজং’ পৃথিবীতে প্রথম ফসল দিয়েছিলেন এবং তিনি সারা বছর পরিমাণমতো আলো-বাতাস, রোদ-বৃষ্টি দিয়ে ভাল শস্য ফলাতে সহায়তা করেন। তাই বছরের নতুন ফসল ঘরে তোলার সময় ‘মিসি সালজং’কে ধন্যবাদ জানাতে এই উৎসবের আয়োজন করে গারোরা। ফসল দেবতাকে উৎসর্গ না করে তারা কোন খাদ্য ভোগ করেন না।