আ.বিমা টাইমস নিউজ ডেস্ক: কাল সেই মধুপুরে ইকোপার্ক বিরোধী আন্দোলনের ঐতিহাসিক ৩রা জানুয়ারি। ২০০৪ সালের ৩রা জানুয়ারী মধুপুরের ইকোপার্ক বিরোধী আন্দোলনের মিছিলে যৌথবাহিনীর গুলিতে পীরেন স্নাল (১৭তম মৃত্যুবার্ষিকী) নিহত হন। গারো আদিবাসী সংগঠনগুলো দিনটিকে প্রতি বছর স্মরণ করে আসছে। দিনটিকে পালনের মাধ্যমে মূল অপরাধীদের বিরুদ্ধে বিচারসহ এবং মধুপুর গড়াঞ্চলে ইকোটোরিজ্যাম চিরতরে বন্ধের গণদাবি উঠেছে ঘটনার পর থেকে।
২০০০ সাল বন বিভাগ পরিকল্পনা করে মধুপুরে ইকো পার্ক তৈরির। বিশ্ব ব্যাংক এবং এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংক অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত হয় টাঙ্গাইলের মধুপুরে শালবন অঞ্চলে। ১০টা আধুনিক পিকনিক স্পট, ৬টা ব্যারাক; এছাড়াও বানানো হবে পর্যটকদের জন্য নানান সুবিধা। অর্থাৎ ৪৭৮ বর্গকিলোমিটার ব্যাপী শালবন পুরোটা ঘিরে ফেলে এই ‘ইকো’পার্ক বানানো হবে।
আদিবাসী পীরেন স্নাল হত্যাকারীদের বিচারের দাবি জানিয়ে আসছে গারো আদিবাসী ছাত্র সংগঠনসহ বিভিন্ন আদিবাসী সংগঠন। বিগত বিএনপি জোট সরকারের আমলে গারো আদিবাসীদের সঙ্গে কোনো আলোচানা ছাড়াই মধুপুর বনাঞ্চলে ইকোপার্ক নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এটি ছিল আদিবাসীদের ভূমির অধিকার থেকে বঞ্চিত করার একটি মহাকৌশল। এর জের ধরে প্রতিবাদ করে সেখানকার ১৭তম মৃত্যুবার্ষিকী গারো আদিবাসীরা। ২০০৪ সালের ৩ জানুয়ারি আদিবাসীদের বিক্ষোভ মিছিলে বনরক্ষীদের অর্তকিত গুলিতে নিহত হন পীরেন ম্নাল। এতে আহত হয় আরও শতাধিক লোক। তাদের অনেকে এখনও আজীবন পঙ্গুত্ব নিয়ে বেঁচে আছেন। যার সুবিচার আজও গারো আদিবাসীরা পায়নি।
ফলে কাল স্থানীয় গারো সংগঠন জয়েনশাহী উন্নয়ন পরিষদ, বাগাছাস, গাসু, জিএসএফ, আজিয়াসহ অন্যান্য গারো অঙ্গসংগঠন সন্মিলিতভাবে পীরেন স্নালের নৃশংস হত্যাবার্ষিকী উপলক্ষে সকাল ৯টায় কবরস্থানে পুষ্পস্তবক অর্পণ, ১০টায় তাঁর স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধাঞ্জলি এবং এরপর আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। আলোচনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন জনাব রেমন্ড আরেং (কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ), আরও উপস্থিত থাকবেন জয়েনশাহী উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি জনাব ইউজিন নকরেক এবং অন্যান্য সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। এছাড়াও তাঁর স্মৃতিকে চিরস্মরণীয় করে রাখতে আরও কিছু কর্মসূচীর মাধ্যমে দিনটি উদযাপনের কথা রয়েছে বলে জানান স্থানীয় গারো যুব নেতারা।