আন্তর্জাতিক নিউজ ডেস্ক: ফ্রান্সে ফের করোনার সংক্রামন হু হু করে বাড়ছে। ফলে দেশটিতে করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আরও কঠোর হচ্ছে ফ্রান্স সরকার। পুরো দেশজুড়ে স্বাস্থ্যবিধি মানার পাশাপাশি বিধিনিষেধও বাড়ানো হয়েছে। দেশে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। গতকাল বুধবার স্থানীয় সময় ঠিক রাত আটটায় ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ জাতীয় টেলিভিশিন চ্যানেলে জাতির উদ্দেশে এক ভাষণে এই ঘোষণা প্রদান করেন।
উল্লেখ্য, গত মাসের শেষের দিকে ফ্রান্সের ১৬টি বিভাগীয় শহরে ‘লকডাউন’ঘোষণা করা হয়েছিল। সেসময় তিনি অন্যান্য অঞ্চলেও প্রয়োজনে ‘লকডাউন’ বাড়ানোর পরিকল্পনার কথাটি উল্লেখ করেন। ফলে আগামী শনিবার থেকে দেশে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য ছাড়া সব ধরনের দোকানপাট বন্ধ রাখা হবে। কোন বিশেষ কারণ ছাড়া ১০ কিলোমিটারের বেশী ভ্রমণ করা নিষেধাজ্ঞার মধ্যে থাকবে; কিন্তু একান্ত পরিহার্য কারণে বাসস্থান থেকে সর্বোচ্চ ৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত ভ্রমণ করা যাবে। এ ঘোষণার ফলে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭ টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত কারফিউ বলবৎ থাকবে।
প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ তাঁর ভাষণে দেশের করোনা পরিস্থিতি বর্তমানে অত্যন্ত ‘নাজুক’ বলে উল্লেখ করেন। এপ্রিল মাসে খ্রীষ্টানদের ধর্মীয় উৎসব ইস্টার সানডের ছুটিকে সামনে রেখে সকলকে করোনা নিয়ন্ত্রণে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ মনে করেন। তিনি আরও উল্লেখ করেন, এখনই পদক্ষেপ না নিতে পারলে আমরা করোনার নিয়ন্ত্রণ হারাবো। এই ঘোষণার পর আগামী সপ্তাহ থেকে স্কুল বন্ধ থাকবে। তবে শিক্ষা কার্যক্রম চলবে অনলাইনের মাধ্যমে।
ম্যাক্রোঁ তাঁর ভাষণে আরও বলেন, একহাতে ভ্যাকসিন প্রয়োগ কার্যক্রম তদারকি; আরেক হাতে করোনার বিস্তার ঠেকানো আমাদের সামনে বড় এটা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে ভ্যাকসিন কার্যক্রম পুরো দেশজুড়ে পদক্ষেপটি আরও জোড়দার করার কথা গুরুত্বের সঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন। ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রম আওতায় যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে যেমন, ৬০ বছরের অধিক বয়সীদের ১৬ এপ্রিলের মধ্যে, ৫০ বছরের উপরের বয়সীদের ১৫ মে, ৫০ বছরের নিচে বয়সীদের ১৫ জুনের মধ্যে এবং গ্রীষ্মের শেষে দিকে ১৮ বছর বয়সী সহ ফ্রান্সের সকল নাগরিকদের ভ্যাকসিন নিশ্চিতভাবে দেয়া হবে বলে তিনি আশস্ত করেন।
ফ্রান্সের করোনা সংক্রামনের পরিস্থিতি গত বুধবারের তথ্যানুযায়ী, নতুন করে ৫৯ হাজার ৩৮ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে, এর মধ্য দিয়ে ফ্রান্সে করোনা শনাক্ত রোগীর সংখ্যা এখন প্রায় ৪০ লাখ ৬০ হাজার। করোনা ভাইরাসে দেশটিতে এখন পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯৫ হাজার ৪৯৫ জন।