আ.বিমা টাইমস নিউজ ডেস্ক: আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে বিভিন্ন আদিবাসী জাতিসত্তা ও সংগঠন যৌথভাবে এক সংহতি সমাবেশের  আয়োজন করে। সংহতি সমাবেশের মূল উদ্দেশ্য হলো, ‘চিম্বুক পাহাড়ে ম্রো ভূমি রক্ষা আন্দোলন’। পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক কমিটির সভাপতি গৌতম দেওয়ানের সভাপতিত্বে ও বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রংয়ের সঞ্চালনায় সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয়।

আয়োজিত সংহতি সমাবেশে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও সাংসদ ফজলে হোসেন বাদশা তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ কারও জমিদারি হয়ে যায় নি। এই দেশ কোনো ‘বিজনেস বা করপোরেট গ্রুপের লুটপাটের লীলাভূমি’ নয়।

ম্রো ভূমি রক্ষা আন্দোলন পিক

রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে বিভিন্ন আদিবাসী জাতিসত্তা ও সংগঠনের সংহতি সমাবেশ  (চিম্বুক পাহাড়ে ম্রো ভূমি রক্ষা আন্দোলন )

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান তিনি বলেন, সংবিধানে বলা আছে, পরিবেশ-প্রতিবেশ রক্ষা করা রাষ্ট্রের অঙ্গীকার। একের পর এক বনে যদি ইকো রিসোর্ট-পাঁচ তারকা হোটেল হতে থাকে, তাহলে পরবর্তী প্রজন্মের জন্য পাহাড় আর বন কীভাবে থাকবে?

মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম বলেন, জাতিসত্তার মানুষ নিজের মতো বাঁচতে চান। এটা কি কোনো মানুষের জন্য বড় দাবি? মানুষকে উচ্ছেদ করে উন্নয়নের নামে এতগুলো মানুষের জীবন বিপন্ন করা কোনো গণতান্ত্রিক জনদরদি সরকার মেনে নিতে পারে না।

নাট্য ব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদ বলেন, ‘আমার বিশ্বাস, যতই পাঁয়তারা চলুক, চিম্বুক পাহাড়ে পাঁচতারা হোটেল হবে না, করতে দেব না। সারা বিশ্বের পরিবেশবাদী মানুষ এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবেন। উন্নয়ন মনেই দালানকোঠা নয়। মানুষকে গৃহ থেকে উচ্ছেদ করে পাঁচতারা হোটেল নির্মাণ করতে হবে কেন?’

এছাড়াও অন্যদের মধ্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক রেহনুমা আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রোবায়েত ফেরদৌস ও জোবাইদা নাসরীন, সিপিবি নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক সদস্য নিরূপা দেওয়ান, নারীমুক্তি কেন্দ্রের ঢাকা মহানগর শাখার সভাপতি সীমা দত্ত প্রমুখ বক্তব্য দেন।

বান্দরবানের চিম্বুক পাহাড় এলাকা থেকে ম্রো জনগোষ্ঠীর একটি দল এই কর্মসূচিতে যোগ দেয়। বাঁশির সুরে নিজেদের দুর্দশা ও দাবির কথা জানায় তারা। সমাবেশে তাদের এজন ম্রো ভাষায় বক্তব্যও দেন। বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকার আদিবাসী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা এতে সংহতি জানিয়ে অংশ নেন।

দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আন্দোলনকারীদের একটি প্রতিনিধিদল প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিতে তাঁর কার্যালয়ের অভিমুখে রওনা দেয়; এবং বাকীরা  শাহবাগ থেকে মিছিল নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি ঘুরে ফের শাহবাগে এসে অবস্থান করছেন।

বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং জানান, প্রতিনিধি দল ফেরার পর তাঁরা আজকের কর্মসূচি সমাপ্ত ঘোষণা করবেন।